ভারতের উপর 'ট্রাম্প ট্যারিফ' কার্যকর হলে আপনার রান্নাঘরের বিল কমে যেতে পারে - Breaking Bangla

Breaking

Post Top Ad

Sunday, March 9, 2025

ভারতের উপর 'ট্রাম্প ট্যারিফ' কার্যকর হলে আপনার রান্নাঘরের বিল কমে যেতে পারে


 আমেরিকার 'ট্রাম্প ট্যারিফ' এবং একজন সাধারণ ভারতীয়ের রান্নাঘরের মধ্যে কী সম্পর্ক থাকতে পারে?  আপনি হয়তো কখনো লক্ষ্য করেন নি, কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প ২রা এপ্রিল থেকে ভারতের উপর যে 'টিট ফর ট্যাট ট্যারিফ' আরোপের কথা বলছেন, তা আপনার রান্নাঘরের বিলও কমাতে পারে।  আসুন পুরো গল্পটি বুঝতে নিই...


সম্প্রতি মার্কিন সংসদে ভাষণ দেওয়ার সময় রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন যে ভারতের মতো দেশগুলি আমেরিকান মোটরগাড়ি এবং অন্যান্য পণ্যের উপর উচ্চ শুল্ক আরোপ করে, কখনও কখনও ১০০% পর্যন্ত।  অতএব, তিনি আমেরিকার উপর যে শুল্ক আরোপ করেন, ভারতের উপরও সেই একই শুল্ক আরোপ করবেন।  একে 'পারস্পরিক শুল্ক' বলা হচ্ছে।  এমন পরিস্থিতিতে, ভারত আমেরিকা থেকে কী আমদানি করে তা জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ভারতের আমদানি

ভারতে অনেক জিনিস আমেরিকা থেকে আমদানি করা হয়।  মূল্যের দিক থেকে যদি আমরা এটি দেখি, তাহলে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারত আমেরিকা থেকে ৪০.৭ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করেছে।  আমেরিকা থেকে ভারতে প্রায় ৫,৭৪৯ ধরণের জিনিসপত্র আমদানি করা হয়েছিল।  ভারত মূলত পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস, মুক্তা ও মূল্যবান পাথর, পারমাণবিক চুল্লি ও বয়লার, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি এবং বেশ কিছু কৃষি পণ্য আমদানি করে।  আপনার রান্নাঘরের বিল কমানোর সমাধান এই কৃষি পণ্য আমদানির মধ্যেই লুকিয়ে আছে।

বাদাম, পেস্তা এবং আপেলের কারণে আমেরিকা ধনী হবে

২০২৪ সালে আমেরিকা থেকে ভারতে কৃষি পণ্য আমদানি ১.৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে বলে আশা করা হচ্ছে।  আমদানি করা প্রধান পণ্যগুলি হল বাদাম ($868 মিলিয়ন), পেস্তা ($121 মিলিয়ন) এবং আপেল ($21 মিলিয়ন)।  এছাড়াও, ভারত তার ডালের চাহিদা মেটাতে আমেরিকা থেকে বৃহৎ পরিসরে মসুর ডাল আমদানি করে, যদিও ভারত ডাল আমদানিতে খুব বেশি শুল্ক আরোপ করে না।

আমেরিকা চায় ভারতের মতো দেশে তার কৃষিপণ্যের চাহিদা বৃদ্ধি পাক।  এর প্রধান কারণ হলো দেশটি কৃষিতে যে বিশাল ভর্তুকি দেয়।  আমেরিকায় চালের উপর ৮২ শতাংশ, ক্যানোলায় ৬১ শতাংশ, চিনিতে ৬৬ শতাংশ, তুলার উপর ৭৪ শতাংশ এবং পশমের উপর ২১৫ শতাংশ পর্যন্ত ভর্তুকি দেওয়া হয়।  এই পণ্যগুলির জন্য তার ভারতীয় বাজারের প্রয়োজন।

শুধু তাই নয়, আমেরিকা দীর্ঘদিন ধরেই ভারতকে দুগ্ধজাত পণ্যের বাজার উন্মুক্ত করার জন্য চাপ দিয়ে আসছে।  তবে ভারত দাবি করে যে জার্সি গরুর খাদ্য আমিষ এবং তাদের থেকে উৎপাদিত দুধ ভারতে আমদানি করা হয় না।  অন্যদিকে ভারতের আমুল ব্র্যান্ড আমেরিকায় দুধের ব্যবসা করে।

বর্তমানে, একদিকে ভারত আমেরিকান পণ্যের উপর শুল্ক আরোপের মাধ্যমে ভারতে তাদের দামি করে তুলছে।  অন্যদিকে, এটি দেশের কোটি কোটি মানুষের জীবিকা রক্ষা করে।  এমন পরিস্থিতিতে, যদি ভারত 'টিট ফর ট্যাট' ট্যারিফ নীতির চাপে আমেরিকান পণ্যের উপর শুল্ক কমায়, তাহলে ভারতের বাজার আমেরিকার সস্তা কৃষিপণ্যে ভরে যাবে, কারণ এর প্রচুর ভর্তুকির কারণে।  ক্যালিফোর্নিয়ার বাদামের ক্ষেত্রে আমরা এর অসুবিধাগুলি দেখেছি।

'টিট ফর ট্যাট ট্যারিফ' এড়াতে ভারতের পরিকল্পনা

ডোনাল্ড ট্রাম্প যদি ২রা এপ্রিল থেকে 'টিট ফর ট্যাট ট্যারিফ' নীতি বাস্তবায়ন করেন, তাহলে কীভাবে তা এড়ানো যাবে তা নিয়ে ভারতে আলোচনা শুরু হয়েছে।  এই প্রসঙ্গে, একদিকে সরকার সেইসব পণ্যের তালিকা তৈরি করছে যেখানে আমেরিকান পণ্যের উপর কর কমানো যেতে পারে।  দ্বিতীয় ধারণাটি হল আমেরিকাকে 'মোস্ট ফেভারড নেশন' মর্যাদা দেওয়া।  এই মর্যাদা কম শুল্কে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারতের মধ্যে বাণিজ্য নিশ্চিত করতে পারে।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad