দুধ এবং ঘি ভারতীয় খাদ্যতালিকার একটি অপরিহার্য অংশ। এগুলিতে প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি থাকে এবং এগুলিকে আপনার খাদ্যতালিকার অংশ করে তুললে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য উপকার পাওয়া যায়। কিন্তু যদি আপনি অতিরিক্ত দুধ এবং ঘি খান, তাহলে উপকারের পরিবর্তে ক্ষতিকারক হতে পারে। এই দুটি জিনিসই সুষম পরিমাণে ব্যবহার করা উপকারী, তবে অতিরিক্ত পরিমাণে খাওয়া বা পান করা হলে শরীরের ক্ষতিও করতে পারে।
আসলে, দিদিমারা বলেন যে প্রত্যেকেরই সঠিকভাবে দুধ এবং ঘি খাওয়া এবং পান করা উচিত কারণ এটি শরীরের হাড়কে শক্তিশালী করে এবং আমাদের সুস্থ রাখে। তবে, এই বিষয়ে ডাক্তারদের অন্য কিছু বলার আছে। চিকিৎসকদের মতে, একটি নির্দিষ্ট সময়ের পরে দুধ এবং ঘি খাওয়া কমিয়ে আনা উচিত। কারণ আগে মানুষ বেশি দুধ এবং ঘি খাওয়ার পরে শারীরিক পরিশ্রম করত, যার কারণে এই সব হজম হত, কিন্তু আজকের সময়ে পরিস্থিতি ভিন্ন। এমন পরিস্থিতিতে, আমরা আয়ুর্বেদিক বিশেষজ্ঞ ডঃ কিরণ গুপ্তের কাছ থেকে শিখব কেন অতিরিক্ত দুধ এবং ঘি খাওয়া শরীরের জন্য ক্ষতিকর?
ওজন বৃদ্ধি এবং স্থূলতা
ডাঃ কিরণ গুপ্ত বলেন যে দুধ এবং ঘিতে প্রাকৃতিকভাবে উচ্চ পরিমাণে চর্বি পাওয়া যায়। যদি কোনও ব্যক্তি প্রয়োজনের চেয়ে বেশি পরিমাণে এগুলি গ্রহণ করেন, তবে এটি শরীরে অতিরিক্ত ক্যালোরি সঞ্চয় করতে পারে, যার ফলে ওজন দ্রুত বৃদ্ধি পায়। অতিরিক্ত চর্বি শরীরে চর্বি হিসেবে জমা হয়, যা স্থূলতার দিকে পরিচালিত করতে পারে। স্থূলতা নিজেই হৃদরোগ, ডায়াবেটিস এবং উচ্চ রক্তচাপের মতো অনেক রোগের জন্ম দেয়।
হৃদরোগের ঝুঁকি
ঘি-তে প্রচুর পরিমাণে স্যাচুরেটেড ফ্যাট থাকে, যা শরীরে খারাপ কোলেস্টেরলের (LDL) মাত্রা বাড়িয়ে দিতে পারে। এর ফলে ধমনীতে প্লাক জমা হয়, যা হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। অতিরিক্ত ঘি খাওয়ার ফলে হৃদপিণ্ডের রক্তনালী পাতলা হয়ে যেতে পারে, যার ফলে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের মতো গুরুতর সমস্যা দেখা দিতে পারে।
হজমের সমস্যা
দুধ এবং ঘি অতিরিক্ত গ্রহণ হজমের উপর প্রভাব ফেলে। ল্যাকটোজ অসহিষ্ণু ব্যক্তিরা দুধ হজম করতে অক্ষম হন, যার ফলে পেটে ব্যথা, গ্যাস, ডায়রিয়া এবং পেট ফাঁপা হওয়ার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। অতিরিক্ত ঘি খাওয়ার ফলে বদহজম এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও বাড়তে পারে।
লিভার এবং কিডনির উপর প্রভাব
অতিরিক্ত ঘি এবং দুধ গ্রহণ করলে লিভার এবং কিডনির উপর অতিরিক্ত বোঝা পড়তে পারে। অতিরিক্ত চর্বি ফ্যাটি লিভারের মতো সমস্যা তৈরি করতে পারে। একই সময়ে, প্রোটিন এবং ক্যালসিয়ামের অত্যধিক গ্রহণ কিডনির উপর চাপ বাড়ায়, যা পাথর এবং অন্যান্য কিডনি সম্পর্কিত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। দুধ এবং ঘি স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী, তবে সুষম পরিমাণে এগুলি গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ।
No comments:
Post a Comment