লিভার আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি শরীরের বিভিন্ন কাজে সাহায্য করে। এতে ৫০০ ধরণের কাজ রয়েছে। এজন্য একে শরীরের কারখানাও বলা হয়। লিভার শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ ধ্বংস করে, হজমের জন্য প্রয়োজনীয় পিত্ত তৈরি করে এবং শরীরে গ্লুকোজের ভারসাম্য বজায় রাখে। লিভার ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ভিটামিন সঞ্চয় করে এবং শরীরের শক্তির মাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও, এটি রক্তে কোলেস্টেরল এবং হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও কাজ করে। যদি লিভারের সঠিকভাবে যত্ন না নেওয়া হয়, তাহলে এটি অনেক রোগের কারণ হতে পারে। এখানে আমরা আপনাকে এমন ৫টি লক্ষণ সম্পর্কে বলছি যা ইঙ্গিত দেয় যে আপনার লিভারে কিছু ভুল হচ্ছে।
লিভারের ক্ষতির লক্ষণ
১. শরীরে হলুদ ভাব- মায়ো ক্লিনিকের মতে, যদি শরীরের ত্বকে হলুদ ভাব দেখা যায়, তাহলে বোঝা যায় লিভারে কোনও সমস্যা আছে। এতে ত্বক এবং চোখে হলুদ ভাব দেখা দিতে শুরু করে। তবে, কালো এবং বাদামী ত্বকে হলুদ ভাব দেখা যায় না।
২. পেট ব্যথা – লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সাথে সাথেই পেট ব্যথা শুরু হয়। পেটে ব্যথা লিভারের ক্ষতির প্রথম লক্ষণ হতে পারে। তবে, পেটে ব্যথা আরও অনেক কারণে হতে পারে। তবে যদি পেটে ব্যথার সাথে সাথে ত্বকের ফ্যাকাশে ভাব এবং ক্লান্তিও থাকে, তাহলে এটিকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়া উচিত।
৩. ফোলাভাব- যখন লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন শরীরের অনেক জায়গায় ফোলাভাব দেখা দিতে শুরু করে। এতে পা এবং গোড়ালিতে ফোলাভাব দেখা দেয়। এর ফলে পায়ে ব্যথা অনুভূত হয় এবং পা ফুলে যেতে পারে।
৪. প্রস্রাবের রঙ গাঢ় হওয়া – লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সাথে সাথে প্রস্রাবের রঙ গাঢ় হতে শুরু করে। প্রস্রাবের রঙের পরিবর্তন আরও অনেক কারণেও ঘটে, তবে যদি এটি অনেক দিন ধরে চলতে থাকে তবে এটিকে গুরুত্ব সহকারে নেওয়া উচিত। এতে, প্রস্রাব ছাড়াও, মলের রঙও ঘোলাটে হয়ে যেতে পারে।
৫. ক্লান্তি এবং দুর্বলতা- যখন লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন চরম ক্লান্তি এবং দুর্বলতা দেখা দেয়। যদি এটি শীঘ্রই নিরাময় না হয় তবে এটি লিভারের ক্ষতির লক্ষণও হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে, অবিলম্বে একজন ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা উচিত।
আপনার লিভারকে কীভাবে রক্ষা করবেন
লিভারকে সুরক্ষিত রাখতে, ট্রান্স ফ্যাট, প্যাকেটজাত তেলে ভাজা খাবার, বিস্কুট, চকলেট, চিনি, লাল মাংস, অ্যালকোহল, সিগারেট ইত্যাদি প্রক্রিয়াজাত খাবার খাওয়া বন্ধ করুন এবং পরিবর্তে মোটা শস্য, আস্ত শস্য, সবুজ শাকসবজি, তাজা ফল, বীজ, শুকনো ফল ইত্যাদি খান। এছাড়াও, নিয়মিত ব্যায়াম করুন, পর্যাপ্ত ঘুম পান করুন এবং পর্যাপ্ত জল পান করুন।
No comments:
Post a Comment