নিজস্ব প্রতিবেদন, ০৪ জানুয়ারি, কলকাতা : শুক্রবার রাতে বাবুল সুপ্রিয় এবং অভিজিৎ গাঙ্গুলি রাস্তার মাঝখানে একে অপরের সাথে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে তুমুল কথা কাটাকাটি হয়। প্রায় ১৫-২০ মিনিট দুই নেতার মধ্যে বচসা হয়। প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, গাড়িতে করে হাওড়ায় নিজের বাড়িতে যাচ্ছিলেন বাবুল সুপ্রিয়। একই সময়ে অভিজিৎ গাঙ্গুলির গাড়িও কলকাতা থেকে হাওড়া যাচ্ছিল। এসময় হর্ন বাজানোকে কেন্দ্র করে মাঝপথে দুই নেতার মধ্যে সংঘর্ষ হয়।
বাবুল সুপ্রিয়র দাবী, তিনি নিজেই গাড়ি চালিয়ে ফিরছিলেন। ঠিক তখনই পেছন থেকে প্রচণ্ড গতিতে একটা গাড়ি হুটারের হর্ন বাজিয়ে আসছিল। এটি বাবুল সুপ্রিয়র গাড়িকে ওভারটেক করার চেষ্টা করে। এ সময় বাবুল সুপ্রিয় অন্য গাড়ির চালককে সঠিকভাবে গাড়ি চালাতে বলেন।
বাবুলের দাবী, সে অন্য গাড়ির চালককে বলল, এভাবে গাড়ি চালাচ্ছ কেন? মানুষ মারবে! এটা আমার গাড়িতে ধাক্কা দিলে দুর্ঘটনা ঘটবে। তৃণমূল বিধায়ক দাবী করেছেন যে একই সময়ে অন্য গাড়ির পিছন থেকে কেউ চিৎকার করে বলেছিল, "ড্রাইভ, চালাও।" অর্থাৎ চালককে গাড়িটিকে সামনের দিকে নিয়ে যেতে বলুন।
এরপর অন্য গাড়িটি সামনে এলে বাবুল সুপ্রিয় আবার তা থামিয়ে দেন। তাঁর দাবী, তমলুকের বিজেপি সাংসদ ওই সময় গাড়ির পিছনের সিটে বসেছিলেন। গাড়ির গায়ে 'এমপি তমলুক' লেখাও রয়েছে বলে দাবী করেছেন তৃণমূল নেতা। বাবুল সুপ্রিয় বলেন, সাংসদকে দেখে গাড়ির পেছনে গিয়ে তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করেন। ড্রাইভারকে সঠিকভাবে গাড়ি চালাতে বলুন।
বাবুল সুপ্রিয় দাবী করেন, ওই সময় সাংসদ তাঁকে বলেছিলেন, 'যাই করেছেন ভালোই করেছেন!' বাবুল সুপ্রিয় দাবী করেন, তাঁর সঙ্গেও খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে। এরপর দুই নেতার বচসায় স্থানীয় লোকজনের ভিড় জমে যায়। স্থানীয় লোকজনের দাবী, তখন বাবুল সুপ্রিয় এমপিকে ক্ষমা চাইতে বলেছিলেন। ক্ষমা না চাওয়ায় এমপির গাড়িকে এগোতে দেবেন না বলেও জানান তিনি।
বাবুল সুপ্রিয় দাবী করেছেন, সাংসদ তার কাছে ক্ষমা চাওয়া তো দূরের কথা, তাকে আবার গালি দিয়েছেন। তৃণমূল বিধায়ক দাবী করেছেন যে বিজেপি সাংসদও তাকে বলেন যে "আমি যা বলেছি তাই করেছি, আমি আবার বলব।" বাবুল সুপ্রিয়কেও 'সাবধানে' থাকতে সতর্ক করা হয়েছে বলে জানা গেছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, প্রায় ১৫-২০ মিনিট ধরে এই সংঘর্ষ চলে। বাবুল দাবী করেন, এমপি গাড়ি থেকে নামেননি। ক্ষমা চাননি।
অন্যদিকে অভিজিৎ গাঙ্গুলি বলেছেন, বেপরোয়া গতি থাকলে পুলিশ ব্যবস্থা নিত। তাঁর দাবী, বাবুল সুপ্রিয় গাড়ির সামনে 'এমপি তমলুক' লেখা দেখেছেন। তা দেখে বাবুল সুপ্রিয় জোরে গাড়ি চালিয়ে তার গাড়ির সামনে থামান। উল্টে বিজেপি সাংসদের দাবীর সামনেই বাবুল নিজেই সাংসদের গাড়ির সামনে গালাগাল শুরু করেন।
তাঁর কথায়, প্রথমে তিনি বুঝতে পারেননি বাবুল সুপ্রিয় ওই গাড়িতে ছিলেন। মন্ত্রী গাড়ি থেকে নামলেই বুঝে যান। সাংসদ আরও দাবী করেন, তর্কের সময় বাবুল সুপ্রিয় গাড়ির জানালা দিয়ে হাত দেন। অভিজিৎ গাঙ্গুলি বলেন, এর ফলে তার হাত থেকে মোবাইল ফোন পড়ে যায় এবং তার কিছুটা ক্ষতি হয়।
No comments:
Post a Comment