মঙ্গলবার ইউক্রেন রাশিয়ার অভ্যন্তরে একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালিয়েছে, যাকে এখন পর্যন্ত তাদের সবচেয়ে বড় আক্রমণ বলে বর্ণনা করা হচ্ছে। রাশিয়ান সীমান্ত থেকে কয়েকশ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত লক্ষ্যবস্তুগুলিকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছিল, যা যুদ্ধক্ষেত্রে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তোলে।
বিমানবন্দর কার্যক্রম বন্ধ, স্কুল বন্ধ এবং রাশিয়ান সীমান্ত থেকে কয়েকশ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত লক্ষ্যবস্তুতে ইউক্রেনের আক্রমণ পুতিনকে হতবাক করে দিয়েছে।
হামলার বিবরণ: ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর জেনারেল স্টাফের মতে, হামলাগুলি গোলাবারুদ ডিপো এবং রাসায়নিক কারখানাগুলিকে লক্ষ্য করে করা হয়েছিল। ইউক্রেনীয় নিরাপত্তা পরিষেবা (এসবিইউ) সূত্র জানিয়েছে যে এই আক্রমণ রাশিয়ার যুদ্ধ ক্ষমতা দুর্বল করার একটি বড় পদক্ষেপ। রাশিয়া দাবি করেছে যে তারা মার্কিন-ভিত্তিক ATACMS ক্ষেপণাস্ত্র এবং ব্রিটিশ-নির্মিত স্টর্ম শ্যাডো ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে। ইউক্রেন রাশিয়ার ব্রায়ানস্ক অঞ্চলে একটি শোধনাগার, একটি গোলাবারুদ ডিপো এবং একটি রাসায়নিক কারখানায় আক্রমণ করেছিল। ইউক্রেন রাশিয়ার পশ্চিম সারাতোভ অঞ্চলেও হামলা চালিয়েছে, যেখানে দুটি শিল্প কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইতিমধ্যে, রাশিয়ার মধ্য ও পশ্চিমাঞ্চলের অন্তত নয়টি বিমানবন্দর সাময়িকভাবে কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে, এবং সারাতোভ অঞ্চলের স্কুলগুলি বন্ধ করতে বাধ্য করা হয়েছে। ইউক্রেন রাশিয়ার ব্রায়ানস্ক অঞ্চলে একটি শোধনাগার, একটি গোলাবারুদ ডিপো এবং একটি রাসায়নিক কারখানায় আক্রমণ করেছিল। ইউক্রেন রাশিয়ার পশ্চিম সারাতোভ অঞ্চলেও হামলা চালিয়েছে, যেখানে দুটি শিল্প কারখানা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
যুদ্ধের বর্তমান অবস্থা: ইউক্রেনের রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির জেলেনস্কি বলেছেন যে তার বাহিনীর সংখ্যা এখন ৮৮০,০০০, রাশিয়ার ৬০০,০০০-শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর মুখোমুখি। জেলেনস্কি বলেন, সাম্প্রতিক মাসগুলিতে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এখন রাশিয়ান সেনাদের মোকাবেলা করার জন্য প্রস্তুত। তিনি পশ্চিমা মিত্রদের অস্ত্র সরবরাহ দ্রুত করার আহ্বান জানিয়েছেন।
রাশিয়া ইউক্রেনের বিদ্যুৎ গ্রিডে বারবার বিমান হামলা চালিয়েছে, যার ফলে দেশজুড়ে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে। এই আক্রমণের মধ্যে, রাশিয়ান স্থল বাহিনীও যুদ্ধক্ষেত্রে তাদের কৌশল এগিয়ে নিচ্ছে। ইউক্রেনের অনেক এলাকায় মৌলিক পরিষেবা ব্যাহত হয়েছে, যার ফলে ঠান্ডা আবহাওয়ায় লক্ষ লক্ষ মানুষ বিদ্যুৎ এবং তাপ ছাড়াই সংগ্রাম করছে।
যুদ্ধের কারণে লক্ষ লক্ষ ইউক্রেনীয় নাগরিক প্রচণ্ড কষ্টের সম্মুখীন হচ্ছেন। জাতিসংঘের মতে, লক্ষ লক্ষ মানুষ তাদের বাড়িঘর থেকে বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং প্রতিবেশী দেশগুলিতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছে। অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং নাগরিকরা খাদ্য, পানি এবং চিকিৎসা সহায়তার মতো মৌলিক চাহিদার অভাবের সম্মুখীন হচ্ছেন। অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং দেশ ইউক্রেনকে মানবিক সহায়তা প্রদান করছে।
যুদ্ধক্ষেত্রে আক্রমণের প্রভাব:
রাশিয়ার অভ্যন্তরে ইউক্রেনের আক্রমণ যুদ্ধক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি প্রভাব ফেলতে পারে:
রাশিয়ার সামরিক সক্ষমতা দুর্বল করা: এই আক্রমণগুলির লক্ষ্য রাশিয়ার সামরিক ঘাঁটি এবং সরবরাহ লাইন ব্যাহত করা, যা এর যুদ্ধ ক্ষমতা দুর্বল করে দিতে পারে।
মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব: রাশিয়ার অভ্যন্তরে আক্রমণ রাশিয়ান সামরিক বাহিনী এবং জনগণের মনোবলকে হ্রাস করতে পারে।
প্রতিশোধের জন্য উস্কানি: রাশিয়া এই আক্রমণগুলির কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে, যার ফলে যুদ্ধ আরও তীব্র হতে পারে।
ভূ-রাজনৈতিক পরিণতি: এই যুদ্ধ বিশ্বব্যাপী ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিকেও প্রভাবিত করছে:
রাশিয়া এবং পশ্চিমা দেশগুলির মধ্যে উত্তেজনা: এই যুদ্ধ রাশিয়া এবং পশ্চিমা দেশগুলির, বিশেষ করে আমেরিকা এবং ন্যাটোর মধ্যে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলছে।
বিশ্ব অর্থনীতির উপর প্রভাব: যুদ্ধের ফলে জ্বালানির দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বিশ্ব বাণিজ্য ব্যাহত হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক সহযোগিতা দুর্বল হওয়া: যুদ্ধ আন্তর্জাতিক সহযোগিতা দুর্বল করে দিয়েছে এবং বিভিন্ন বিষয়ে দেশগুলির মধ্যে আলোচনা আরও কঠিন করে তুলেছে।
No comments:
Post a Comment