মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে পুনরায় সশস্ত্র সংঘাত শুরু হওয়ার পর প্রায় ৮,০০০ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, “আমার কাছে তথ্য আছে যে প্রায় ৮,০০০ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে মন্ত্রিসভায় আমরা (এ বিষয়ে) গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করব।”
তিনি আরও জানান, নীতিগতভাবে বাংলাদেশ আর কোন জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেবে না।
নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের আর অতিরিক্ত শরণার্থীদের মানবিক আশ্রয় দেওয়ার সামর্থ্য নেই।”
তিনি আরও বলেন, মিয়ানমারের সীমান্ত সিলগালা করা হয়েছে। তবে সীমান্ত পুরোপুরিভাবে সুরক্ষিত করা কঠিন বলেও স্বীকার করে নেন।“সীমান্ত সম্পূর্ণরূপে সিলগালা করা সম্ভব নয়,” তিনি বলেন। তবে সরকার রোহিঙ্গাদের আরও অনুপ্রবেশ রোধে প্রচেষ্টা চালাবে বলেও জানান।পররাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, পরবর্তী দুই দিনের মধ্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের ব্যাপারে আলোচনা করবেন।রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে তৌহিদ হোসেন বলেন, রাখাইন রাজ্যের বেশিরভাগ এলাকা নিয়ন্ত্রণকারী বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন সহজতর করা প্রয়োজন।“আমি মনে করি এটাই এগিয়ে যাওয়ার পথ। তবে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে কতটা করা সম্ভব, তা আমাদের মূল্যায়ন করতে হবে,” তিনি আরও বলেন।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে কক্সবাজার জেলায় ১০ লক্ষাধিক জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিচ্ছে বাংলাদেশ। তাদের অধিকাংশই মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের পর দেশটি ছেড়ে পালিয়ে আসে। জাতিসংঘ এ ঘটনাকে ‘জাতিগত নিধনের একটি আদর্শ উদাহরণ’ হিসেবে আখ্যায়িত করে। অন্যদিকে, মানবাধিকার সংগঠনগুলো একে ‘গণহত্যা’ বলে অভিহিত করে।
গত সাত বছরে একজন রোহিঙ্গাও তাদের ঘরে ফিরে যেতে পারেনি। মিয়ানমার তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হলেও, রাখাইন রাজ্যে তাদের নিরাপত্তা এবং সুরক্ষা নিয়ে রোহিঙ্গাদের মধ্যে আস্থার অভাবের কারণে দুবার প্রত্যাবাসন প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
No comments:
Post a Comment