এদেশ যেভাবে শেখ হাসিনাকে রক্ষা করে
ব্রেকিং বাংলা ন্যাশনাল ডেস্ক, ৬ অগাস্ট : শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়ার মাত্র ৪৫ মিনিট সময় পান। বিমান বাহিনীর একটি বিমানে তিনি ভারতে যান। ভারত এই তথ্য পাওয়ার সাথে সাথেই নিরাপত্তা সংস্থাগুলো যেকোনও জরুরি অবস্থা মোকাবেলার পরিকল্পনা করে। ভারতীয় বিমান বাহিনীর রাডার বাংলাদেশের আকাশসীমা পর্যবেক্ষণ শুরু করে এবং ৫ আগস্ট বিকেল ৩টার দিকে তারা একটি নিম্নস্তরের উড়োজাহাজ ভারতের দিকে আসতে দেখে। তাকে ভারতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল কারণ ততক্ষণে বিমানবাহিনীর আধিকারিক জানতে পেরেছিলেন যে ভিতরে কারা রয়েছে।
এবিপি হিন্দি সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে যে দুটি যুদ্ধবিমান রাফালে বিমানটিকে নিরাপত্তা দিতে অবিলম্বে পাঠানো হয়েছিল। এই দুটি রাফালে জেট হাসিমারা বিমান ঘাঁটির ১০১ স্কোয়াড্রন থেকে উড্ডয়ন করেছিল এবং আগত বিমানের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য কাজ করেছিল। এখানে স্থলভাগে, নিরাপত্তা সংস্থাগুলো ক্রমাগত নজর রাখছিল আগত ফ্লাইটের রুটে। ভারতীয় বিমান বাহিনী এবং সেনাপ্রধান এয়ার চিফ মার্শাল ভিআর চৌধুরী এবং জেনারেল উপেন্দ্র চৌধুরী পুরো ঘটনাটি ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছিলেন।
সূত্রের খবর, শীর্ষ নিরাপত্তা আধিকারিকদের একটি বৈঠকও হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানরা, সেনাপ্রধান জেনারেল দ্বিবেদী এবং ইন্টিগ্রেটেড ডিফেন্স স্টাফ চিফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল জনসন ফিলিপ ম্যাথিউ এতে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
এরপর সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে শেখ হাসিনার বিমানটি হিন্দন বিমান ঘাঁটিতে পৌঁছায়। সেখানে তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। বেস কমান্ডার তাকে গ্রহণ করেন। এরপর তিনি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (এনএসএ) অজিত ডোভালের সঙ্গে দেখা করেন। এক ঘণ্টা ধরে চলে এই বৈঠক। এসময় বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি ও ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হয়। শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করার পর ডোভাল প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে পৌঁছান। সেখানে তিনি নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে যোগ দেন।
এরপর শেখ হাসিনা হিন্দন বিমান ঘাঁটির সেফ হাউসে রাত কাটান। তাদের নিরাপত্তার জন্য এয়ার সার্ভিসের গরুড় কমান্ডোদের মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি ভারতীয় বিমান ঘাঁটির মূল ফটক থেকে ভিতরে পর্যন্ত সর্বত্র অতিরিক্ত নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। সেফ হাউসে কাউকে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। ভবিষ্যৎ পরিস্থিতি কী তা পুরোপুরি পরিষ্কার নয়। মনে করা হচ্ছে, আজও শেখ হাসিনা শুধু ভারতীয় বিমান ঘাঁটির সেফ হাউসেই বোনের সঙ্গে সময় কাটাতে পারেন। সূত্র জানায়, মঙ্গলবার সকালে শেখ হাসিনা যে বিমানে এসেছিলেন। ওই বিমান বাংলাদেশে ফিরে যায়।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ছাত্র আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ার পর ঢাকায়ও আন্দোলনকারীরা ভাংচুর ও তোলপাড় সৃষ্টি করে। এরপর সেনাবাহিনী দায়িত্ব নেয় এবং শেখ হাসিনাকে দেশত্যাগ করতে বলা হয়। এরপর ৫ আগস্ট দুপুর আড়াইটার দিকে তিনি দেশত্যাগ করেন। ছাত্রদের বিক্ষোভ বেশ সহিংস হয়ে ওঠে। বিক্ষোভকারীরা প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ঢুকে ব্যাপক ভাংচুর ও লুটপাট চালায়।
No comments:
Post a Comment