বাংলাদেশ সহিংসতা, ছেলের জন্য কনে দেখতে গিয়েছিলেন, বাড়ি ফিরে জানতে পারলেন মর্মান্তিক ঘটনা - Breaking Bangla |breakingbangla.com | Only breaking | Breaking Bengali News Portal From Kolkata |

Breaking

Post Top Ad

Thursday 25 July 2024

বাংলাদেশ সহিংসতা, ছেলের জন্য কনে দেখতে গিয়েছিলেন, বাড়ি ফিরে জানতে পারলেন মর্মান্তিক ঘটনা



বাংলাদেশ সহিংসতা, ছেলের জন্য কনে দেখতে গিয়েছিলেন, বাড়ি ফিরে জানতে পারলেন মর্মান্তিক ঘটনা 




ব্রেকিং বাংলা ওয়ার্ল্ড ডেস্ক, ২৫ জুলাই : বাংলাদেশে সংরক্ষণ নিয়ে সহিংস বিক্ষোভে ১০০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে।  এদের মধ্যে এমন কিছু মানুষ আছে যাদের শেষকৃত্য করা হয়েছিল দাবিহীন মানুষ হিসেবে।  তার পরিবারের সদস্যরা এখনো আশাবাদী তাদের ছেলে ফিরে আসবে।  একই ঘটনা ঘটেছে বাংলাদেশের বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাকের ছেলের ক্ষেত্রেও।  আবদুর রাজ্জাক কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমি আমার ছেলের বিয়েতে মেয়ে দেখতে গিয়েছিলাম, কিন্তু ফিরে এসে জানতে পারি আমার ছেলে আর এই পৃথিবীতে নেই।  সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলনে সহিংসতার শিকার হন রাজ্জাকের একমাত্র ছেলে। 


 বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২৭ বছর বয়সী হাসিব ইকবাল একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন।  গত শুক্রবার জুমার নামাজ পড়তে ঢাকা মীরপুর এলাকার বাড়ি থেকে বের হয়েছিলেন তিনি।  বাবা রাজ্জাক বলেন, আমারও ছেলের সঙ্গে নামাজ পড়তে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু কিছুটা দেরি হওয়ায় একাই মসজিদে রওনা হয়।  ৬৮ বছর বয়সী বাবা জানান, নামাজ পড়ে বাসায় ফিরলেও ছেলে আসেনি।  নামাজের পর ছেলের বিয়ের জন্য মেয়ে দেখতে যাওয়ার কথা তাই মসজিদ থেকে বাড়ি ফিরে সেখানে গেলাম।


সন্ধ্যায় জানতে পারলাম আমার ছেলে আর এই পৃথিবীতে নেই।

 তিন ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও ইকবাল যখন নামাজ পড়ে বাসায় না ফেরে, তখন দুশ্চিন্তা বাড়তে থাকে।  সন্ধ্যার পর বাইরে হাঙ্গামা ও সহিংসতা চলছিল।  দেড় ঘণ্টা খোঁজাখুঁজি করেও ছেলেকে পাওয়া যায়নি।  পরে সন্ধ্যায় তার মৃত্যুর খবর পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে রাজ্জাক জানান, সন্ধ্যায় হঠাৎ এক যুবক ফোনে জানায়, হাসিবের দেহ স্নান করানো হয়েছে।  এখন আপনি তার দেহ নিয়ে যেতে পারেন।  ইকবালের দেহ কাফিনে মোড়নো অবস্থায় দেখতে পায় পরিবার।  রাজ্জাক বলেন, বিকেলে তিনি মারা গেছেন।  পুলিশ দেহ আঞ্জুমানে মুফিদুলের কাছে পাঠিয়েছে।  মৃতদেহকে স্নান করানো এবং কাফিনে মোড়ানোর কাজ তিনিই করেছিলেন।  আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম বাংলাদেশের একটি দাতব্য সংস্থা, যা পরিত্যক্ত বা গৃহহীন মানুষের দেহ কবরের ব্যবস্থা করে।  আঞ্জুমানে মুফিদুলের কাছে নিয়ে যাওয়ার পর আমাদের এলাকার কয়েকজন যুবক হাসিব ইকবালকে চিনতে পারে।  তারাই ফোনে ইকবালের মৃত্যুর খবর জানায়।


 পরিবার জানায়, ইকবাল খুবই শান্ত প্রকৃতির ছিলেন।  সংরক্ষণ বিরোধী আন্দোলনের সঙ্গে তাঁর কোনও যোগসূত্র ছিল না।  প্রতিবেদনে মৃত্যুর কারণ হিসেবে শ্বাসকষ্ট লিখেছেন চিকিৎসকের মতে, সহিংসতার সময় পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের শেল মারা গেলেও তার বুকে কালো দাগ দেখা গেছে।  তবে এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি।  তিনি বলেন, আমার ছেলে না ফিরলে এসবের কোনো লাভ নেই।  সে ছিল আমার একমাত্র ছেলে এবং আমার পরিবারের উত্তরাধিকারী।  আমি স্বপ্নেও ভাবিনি যে তাকে এভাবে হারাতে হবে।


 একই ঘটনা ঘটেছে ২১ বছর বয়সী মারুফ হোসেনের সাথে।  কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে পড়াশোনা শেষ করে তিন সপ্তাহ আগে চাকরির সন্ধানে ঢাকায় আসেন তিনি।  গত শুক্রবার বাড্ডা এলাকায় সংঘর্ষের সময় হোসেন পিঠে গুলিবিদ্ধ হন।  পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়।  হোসেনের মা ময়না খাতুন বলেন, আমার একমাত্র ছেলেকে গুলি করে হত্যা করেছে।  আমার মারুফ এখন ফিরে আসবে না।  আমার ছেলের সাথে শেষ কথোপকথন ছিল শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad