আসামে প্রতি বছর বন্যা কেন হয়?
ব্রেকিং বাংলা লাইফস্টাইল ডেস্ক, ০৬ জুন : আসাম আজকাল বন্যার প্রকোপ মোকাবেলা করছে। রাজ্যে বন্যার কারণে এখনও পর্যন্ত ১৫ জন প্রাণ হারিয়েছেন। সেখানে বন্যায় ১৩টি জেলার ১৫ লাখের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আধিকারিকদের মতে, রাজ্যের অনেক জায়গায় ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে, নদীগুলির জলস্তর মারাত্মকভাবে বেড়েছে, যার ফলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। অনেক এলাকা থেকে লোকজনকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে বন্যায় কয়েকটি জেলায় বিপর্যয়ের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতি বছর আসামে বন্যার কারণে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, যেখানে বন্যার কারণে বহু মানুষ প্রাণ হারায় এবং পরের বছর একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে। এমতাবস্থায় প্রশ্ন ওঠে আসামে প্রতিবছর বন্যা কেন বহু মানুষের জীবনের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়?
আসামের বন্যার জন্য এর ভৌগলিক কাঠামো সবচেয়ে বেশি দায়ী। আসাম একটি U-আকৃতির উপত্যকা। আশেপাশের এলাকায় খুব কম পয়ঃনিষ্কাশন রয়েছে, যেখানে পাহাড় থেকে আসা জল পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তোলে।
জাতীয় বন্যা কমিশনের মতে, আসামের ৩১১,৫০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এখানে প্রবল প্রবাহের কারণে পার্শ্ববর্তী পাহাড় থেকে আসা জল প্রতিবছর বন্যার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আসলে এই জলের কারণে ব্রহ্মপুত্র ও অন্যান্য উপনদীর জলের উচ্চতা এতটাই বেড়ে যায় যে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
এই রাজ্যের ৪০ শতাংশ সর্বদা বন্যার কবলে থাকে। আসলে আসামের পাহাড়ি অংশ অরুণাচল প্রদেশ ও ভুটানের সংলগ্ন। তিব্বত থেকে উৎপন্ন নদীগুলি অরুণাচল প্রদেশ হয়ে আসামে পৌঁছে। এমতাবস্থায় আসামে প্রবাহিত ব্রহ্মপুত্র ও এর ৪৯টি উপনদী রদ্রার রূপ নেয়। পরিস্থিতি এতটাই বিপজ্জনক হয়ে ওঠে যে রাস্তাঘাটও বন্ধ হয়ে যায় এবং মানুষ যেখানেই থাকে সেখানে আটকা পড়ে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত কয়েক বছরে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনের কারণে উপত্যকার প্রস্থও বেড়েছে, অন্যদিকে এখানকার উত্তর-পূর্বাঞ্চলও ভূমিকম্প অঞ্চলে পড়েছে। প্রতি বছর বন্যার কারণে আসামে বহু মানুষ প্রাণ হারায়।
No comments:
Post a Comment