অচলেশ্বর মহাদেব মন্দির রহস্য
মৃদুলা রায় চৌধুরী, ১৪ জুন : সারা বিশ্বে মহাদেবের অনেক মন্দির রয়েছে। প্রতিটি মন্দিরের নিজস্ব বিশেষত্ব রয়েছে। ভগবান শিবের সমস্ত মন্দিরে শিবলিঙ্গ পূজা করা হয়, তবে রাজস্থানের মাউন্ট আবুর অচলগড়ের অচলেশ্বর মহাদেব মন্দিরটি অন্য সমস্ত মন্দির থেকে আলাদা। কারণ, এই মন্দিরে শিবলিঙ্গ বা শিবের মূর্তি নয়, তাঁর পায়ের আঙুলের পূজা করা হয়।
মহাদেবের ডান হাতের বুড়ো আঙুলের পূজা:
পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, অর্বুদ পর্বতে অবস্থিত নন্দী যখন কাঁপতে শুরু করে, তখন হিমালয়ে তপস্যারত ভগবান শঙ্করের তপস্যা ভেঙে যায়। কারণ ভগবান শিবের প্রিয় গাভী কামধেনু এবং ষাঁড় নন্দীও এই পাহাড়ে বাস করতেন। পর্বত সহ নন্দী ও গরুকে বাঁচাতে ভগবান শঙ্কর হিমালয় থেকে অঙ্গুষ্ঠ প্রসারিত করে অর্বুদ পর্বতকে স্থির করেন।
শিবলিঙ্গের রং বদলায়:
শ্রী অচলেশ্বর মহাদেব মন্দিরের পুরোহিত এবং আশেপাশের লোকজন জানান যে মন্দিরে স্থাপিত শিবলিঙ্গটি প্রতিদিন ২৪ ঘন্টায় দুবার রঙ পরিবর্তন করে। এই শিবলিঙ্গ কখনও কালো আবার কখনও জাফরান রঙে দেখা যায়। এছাড়া জলহরিরও একটি বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। কথিত আছে, গ্রীষ্মকালে বৃষ্টি না হলে জলহরি জলে ভরে গেলে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বৃষ্টি হয়, এখানে ভক্তরা যা চাইবে, তাই পাবে। মনস্কামনা পূর্ণ হলে ভক্তরা জল ও দুধ দিয়ে মন্দিরের জলহরি পূর্ণ করেন।
অলৌকিক পুকুরের রহস্য:
এই মন্দির সম্পর্কে আরও বলা হয় যে শিবের বুড়ো আঙুলের কারণে এখানকার পর্বত স্থিতিশীল। যেদিন এখান থেকে শিবের বুড়ো আঙুল উধাও হয়ে যাবে সেদিন এই পর্বতও ধ্বংস হয়ে যাবে। এখানে প্রভুর বুড়ো আঙুলের নিচে একটি প্রাকৃতিক পুকুর রয়েছে। এই পুকুরে যতই জল ঢালুন না কেন তা কখনো ভরাট হয় না। এতে দেওয়া জল কোথায় যায় তা এখনও রহস্য।
সূক্ষ্ম কারুশিল্প:
এই মন্দিরের কারুকাজ বিস্ময়কর। এই মন্দির সম্পর্কিত একটি জনপ্রিয় গল্পও আছে যে, এখানে সিংহাসনে বসে অচলেশ্বর মহাদেবের কাছ থেকে আশীর্বাদ পেতেন এবং ধর্মকান্তের অধীনস্থ মানুষের কাছে ন্যায়বিচারের শপথ নিতেন। মন্দির চত্বরে দ্বারকাধীশ মন্দিরও নির্মিত। গর্ভগৃহের বাইরে বরাহ, নরসিংহ, বামন, কচ্ছপা, মৎস্য, কৃষ্ণ, রাম, পরশুরাম, বুদ্ধ এবং কল্কি অবতারদের কালো পাথরের মূর্তি রয়েছে।
No comments:
Post a Comment