কয় প্রকার রুদ্রাক্ষ আছে?
ব্রেকিং বাংলা লাইফস্টাইল ডেস্ক, ২৫ ফেব্রুয়ারী : রুদ্রাক্ষকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হয়। এটি সরাসরি ভগবান শিবের সাথে সম্পর্কিত। এই রুদ্রাক্ষ অত্যন্ত উপকারী বলে মনে করা হয়। বিশ্বাস করা হয় যে রুদ্রাক্ষ পরলে তার জীবনের সমস্ত ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। শিবমহাপুরাণ গ্রন্থে মোট ষোল প্রকার রুদ্রাক্ষের উল্লেখ করা হয়েছে।
রুদ্রাক্ষের অনেক প্রকার রয়েছে, সকলেরই ভিন্ন ভিন্ন প্রভাব রয়েছে। পৌরাণিক কাহিনী অনুসারে, একবার তপস্যার সময় ভগবান ভোলেনাথ যখন অত্যন্ত বিচলিত হয়ে পড়েন, তখন তাঁর চোখ থেকে কিছু অশ্রুবিন্দু পৃথিবীতে পড়েছিল যেখান থেকে রুদ্রাক্ষের জন্ম হয়েছিল।
বিশ্বাস অনুসারে, শিব অর্থাৎ রুদ্র রুদ্রাক্ষে থাকেন। এমন অবস্থায় যারা রুদ্রাক্ষ পরিধান করেন তাদের উপর রুদ্রের আশীর্বাদ থাকে। যারা এটি পরেন তাদের নেতিবাচক শক্তি বা শক্তি আসে না। রুদ্রাক্ষ গাছ পাহাড়ি এলাকায় পাওয়া যায়। যেমন, এই গাছগুলি বেশিরভাগ নেপাল, বার্মা, থাইল্যান্ড বা ইন্দোনেশিয়ায় পাওয়া যায়। এই গাছের বীজকে রুদ্রাক্ষ বলা হয়। তবে ভারতেও অনেক পাহাড়ি এলাকায় এই গাছ একটি নির্দিষ্ট উচ্চতায় পাওয়া যায়।
জেনে নিন কত প্রকার রুদ্রাক্ষ এবং এর গুরুত্ব:
এক মুখী রুদ্রাক্ষ:
এটিকে শিবের রূপ বলে মনে করা হয়। সিংহ রাশির জাতকদের জন্য এটি খুবই শুভ। যাঁদের রাশিতে সূর্য সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে, তাঁদের এটি পরা উচিত।
দুই মুখী রুদ্রাক্ষ:
একে অর্ধনারীশ্বর রূপ বলে মনে করা হয়। এই রুদ্রাক্ষ কর্কট রাশির জাতকদের জন্য চমৎকার ফল দেয়। এটি পরলে আত্মবিশ্বাস ও মানসিক শান্তি পাওয়া যায়।
তিনমুখী রুদ্রাক্ষ:
এই রুদ্রাক্ষ হল অগ্নি ও তেজের রূপ। এটি মেষ এবং বৃশ্চিক রাশির জাতকদের জন্য সেরা বলে বিবেচিত হয়। মঙ্গল দোষ দূর করতে এই রুদ্রাক্ষ পরা হয়।
চার মুখী রুদ্রাক্ষ:
একে ব্রহ্মার রূপ বলে মনে করা হয়। এটি মিথুন এবং কন্যা রাশির জন্য সেরা রুদ্রাক্ষ। চর্মরোগ, মানসিক ক্ষমতা, একাগ্রতা ও সৃজনশীলতায় এর বিশেষ উপকারিতা রয়েছে।
পাঁচ মুখী রুদ্রাক্ষ:
একে কালাগ্নিও বলা হয়। এতে করে মন্ত্র শক্তি ও জ্ঞান লাভ হয়। এটি বৃহস্পতি গ্রহের সাথে সম্পর্কিত।
ছয় মুখী রুদ্রাক্ষ:
এটি ভগবান কার্তিকেয়ের রূপ বলে মনে করা হয়। এটি জ্ঞান এবং আত্মবিশ্বাসের জন্য বিশেষ বলে মনে করা হয়। শুক্র গ্রহের জন্য এটি উপকারী।
সাত মুখী রুদ্রাক্ষ:
একে সপ্তর্ষিদের রূপ বলে মনে করা হয়। এতে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আসে। এটি শনি গ্রহের সাথে সম্পর্কিত।
আট মুখী রুদ্রাক্ষ:
এটি আট দেবীর রূপ বলে মনে করা হয়। এটি পরিধান করলে অষ্টসিদ্ধি লাভ হয়। এটি রাহু সম্পর্কিত সমস্যা থেকে মুক্তি দেয়।
নয় মুখী রুদ্রাক্ষ:
এটি পরা শক্তি, সাহস এবং নির্ভীকতা দেয়। এটি সম্পদ, সম্মান এবং খ্যাতি বৃদ্ধিতে সহায়ক প্রমাণিত হয়।
দশ মুখী রুদ্রাক্ষ:
এটি পরলে হাঁপানি, বাত, পেট ও চোখের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়াও এটি প্রধানত নেতিবাচক শক্তি থেকে রক্ষা করে।
এগারো মুখী রুদ্রাক্ষ:
এটি পরলে আত্মবিশ্বাস ও সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা বাড়ে। একটি ধর্মীয় বিশ্বাস আছে যে এটি ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
বারো মুখী রুদ্রাক্ষ:
এটি পরলে পেটের অসুখ, হৃদরোগ এবং মস্তিষ্ক সংক্রান্ত রোগে উপশম পাওয়া যায়। এছাড়াও, এটি সাফল্য অর্জনের জন্যও পরিধান করা হয়।
তেরো মুখী রুদ্রাক্ষ:
এটি বিবাহিত জীবনকে সফল করতে পরা হয়। এটি শুক্র গ্রহের সাথে সম্পর্কিত।
চৌদ্দ মুখী রুদ্রাক্ষ:
এটি পরলে ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় জাগ্রত হয় এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা প্রদান করে।
No comments:
Post a Comment