গাধা বাঁচাল বাঘের কাছ থেকে মালকিনকে
নিজস্ব সংবাদদাতা, ধুপগুড়ি, ০২ ফেব্রুয়ারী : ৬৫ বছর বয়সী ফাতিমা ধুপগুড়ির সোনাখালি গ্রামে থাকেন। প্রতিদিন ফাতিমা তার গরু ও গাধাকে জঙ্গলে নিয়ে যায় চরাতে। তিনি তার গৃহপালিত পশুদের সাথে বনে ছিলেন তখন তিনি একটি হিংস্র চিতাবাঘ দ্বারা আক্রান্ত হন। ৬৫ বছর বয়সী হওয়া সত্ত্বেও, ফাতিমা এক ঘন্টা ধরে চিতাবাঘের সাথে লড়াই চালিয়েছিল এবং অবশেষে তার খপ্পর থেকে পালাতে সক্ষম হন।
আসলে সোনাখালীর জঙ্গলের কাছে এখানে একটি গ্রাম রয়েছে। এই গ্রামেই থাকেন ৬৫ বছর বয়সী ফাতিমা বিবি। প্রতিদিনের মতো বৃহস্পতিবারও সন্ধ্যায় ফাতিমা তার গরু ও গাধাকে জঙ্গলে চরাতে নিয়ে যান। জঙ্গলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই ফাতিমার গরু ঘাস খেতে জঙ্গলের আরও ঢুকে পড়ে। গরুটিকে বনের ভেতরে যেতে দেখে ফাতেমা বিবিও তার পেছনে দৌড়তে শুরু করেন। এসময় তার হাতে একটি ধারালো কুড়ালও ছিল।
সন্ধ্যা হয়ে গেছে, এখন জঙ্গলে অন্ধকার হয়ে আসছে। ফাতিমা বনের গভীরে চলে যান। ফাতিমা সেই আলোকে অনুসরণ করে বনের দিকে এগিয়ে যান। কিছুদূর পর এখানে একটি চিতাবাঘ তাকে অতর্কিতভাবে তাড়া করেন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ফাতিমাকে আক্রমণ করে চিতাবাঘ।
চিতাবাঘটি এক ঘন্টা লড়াই করে এবং ফাতিমাকে এক ঘন্টা ধরে বন্দী করে রাখে। এ সময় চিতাবাঘটি ফাতিমার ঘাড়, পিঠ ও পেটে আঁচড়াতে থাকে। ফাতিমা চিতাবাঘের কবল থেকে পালানোর চেষ্টা করে। এ সময় দুজনের মধ্যে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে লড়াই চলে। কাকতালীয়ভাবে ফাতিমার গাধাটি সে সময় সেখানে পৌঁছে যায়। যখন গাধাটি ফাতিমাকে চিতাবাঘের বন্দী অবস্থায় দেখতে পায়, তখন সে চিতাবাঘের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং গাধাটি থাবা দিয়ে বাঘকে আক্রমণ করতে থাকে। এসময় ফাতিমা কুড়াল দিয়ে চিতাবাঘের শরীরে আঘাত করলে চিতাবাঘটি আহত হয়ে ফাতিমাকে ফেলে চলে যায়।
এ সময় ফাতিমাও রক্তে ভিজে যায়। চিতাবাঘের কবল থেকে পালানোর পর, ফাতিমা কোনোভাবে জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আহত অবস্থায় রাস্তায় পৌঁছতে সক্ষম হন। বাইকে চড়ে এক ব্যক্তি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। লোকটি ফাতিমাকে আহত অবস্থায় দেখে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায় কিন্তু তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় ফাতিমাকে জলপাইগুড়ির জেলা হাসপাতালে রেফার করা হয়। যেখানে ফাতিমার চিকিৎসা চলছে।
এ সময় ফাতিমা জানান, হঠাৎ চিতাবাঘ এসে আমার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। চিতাবাঘটি ৬৫ বছর বয়সী ফাতিমাকে গুরুতর আহত করেছিল। ফাতিমার গলায়, পিঠে ও পেটে আঁচড়ের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
No comments:
Post a Comment