কে ছিলেন বৈষ্ণব সাধক শ্রীমন্ত শঙ্করদেব, যার মন্দিরে প্রবেশ পাননি রাহুল গান্ধী?
ব্রেকিং বাংলা লাইফস্টাইল ডেস্ক, ২৩ জানুয়ারি : কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সোমবার আসামে বৈষ্ণব পণ্ডিত শ্রীমন্ত শঙ্করদেবের জন্মস্থানে পুজো দিতে যাচ্ছিলেন, কিন্তু তাঁকে সেখানে দর্শনের জন্য যেতে দেওয়া হয়নি। রাহুল গান্ধীর ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় আসার সাথে সাথে লোকেরা জানতে চায় বিখ্যাত বৈষ্ণব সাধক শ্রীমন্ত শঙ্করদেব কে ছিলেন -
কথিত আছে যে বিখ্যাত বৈষ্ণব সাধক শ্রীমন্ত শঙ্করদেব আসামের নগাঁও জেলায় অবস্থিত বর্দোয়া থানে জন্মগ্রহণ করেন। উত্তর-পূর্বে সাধু শঙ্করদেবের অনেক প্রভাব ছিল, যার স্মৃতিতে এখানে সাতরা মন্দির তৈরি করা হয়েছিল। মধ্যযুগীয় সাধক এবং মহান সমাজ সংস্কারক শ্রীমন্ত শঙ্করদেবের এই মন্দিরেরও অসমে রাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে।
বৈষ্ণব সাধক শ্রীমন্ত শঙ্করদেব কে ছিলেন?
তিনি ছিলেন একজন বিখ্যাত নাট্যকার, কবি, গায়ক, নৃত্যশিল্পী এবং অসমীয়া ভাষার সামাজিক সংগঠক। তিনি নববৈষ্ণব সম্প্রদায়ের প্রচারের মাধ্যমে আসামের মানুষের জীবনকে সংগঠিত ও সংযুক্ত করার একটি মহান কাজ করেছিলেন। তিনি আসামের গগাঁও জেলার আলিপুখারি গ্রামে ২৬ সেপ্টেম্বর, ১৪৪৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন। শ্রীমন্ত শঙ্করদেব মূর্তি পূজাকে প্রাধান্য দেননি। তার অভিমত, ধর্মীয় উৎসবে পোস্টে একটি মাত্র পবিত্র গ্রন্থ রাখা হয়। একে নৈবেদ্য ভক্তি বলা হয়। তিনি পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহারের ভেলডোঙ্গা স্থানে ২৪ আগস্ট ১৫৬৮ তারিখে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
বৈষ্ণব সাধক শ্রীমন্ত শঙ্করদেবকে ১৫-১৬ শতকের একজন সামাজিক ও ধর্মীয় সংস্কারক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আসামের বোরোরওয়া স্টেশনের মতো অসমিয়া সমাজে শঙ্করদেবেরও একই গুরুত্ব রয়েছে। তিনি আসামের ভক্তি আন্দোলনকে অনুপ্রাণিত করার জন্য পরিচিত। তাঁর চিন্তাধারা ছিল ভাগবত পুরাণের উপর ভিত্তি করে। তাঁর শিক্ষা আসামের বিভিন্ন জাতি ও জনগোষ্ঠীকে একক সাংস্কৃতিক ইউনিটে একত্রিত করেছিল।
শঙ্করদেব জাতিগত বৈষম্য, গোঁড়া ব্রাহ্মণ আচার ও ত্যাগ থেকে মুক্ত সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের ধারণার উপর ভিত্তি করে একটি সমাজকে সমর্থন করেছিলেন। তিনি মূর্তি পূজার পরিবর্তে প্রার্থনা ও নাম জপের ওপর জোর দেন। তাঁর ধর্ম ছিল ঈশ্বর, ভক্ত ও গুরুর কাছে প্রার্থনার চারটি বিষয়ের উপর ভিত্তি করে। তিনি একটি ভাগবত ধর্মীয় আন্দোলন শুরু করেন, যাকে নব্য-বৈষ্ণব আন্দোলনও বলা হয়। আসাম এবং পার্শ্ববর্তী রাজ্যের অনেক এলাকায় শ্রীমন্ত শঙ্করদেবের ভক্ত ও অনুসারীদের একটি বিশাল জনসংখ্যা রয়েছে।
No comments:
Post a Comment