সনাতন ধর্মে বনের গুরুত্ব
ব্রেকিং বাংলা লাইফস্টাইল ডেস্ক, ১৩ জানুয়ারি : প্রতি বছর ২১শে মার্চ বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক বন দিবস হিসাবে পালিত হয়। এই দিনটি বনের গুরুত্ব সম্পর্কে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পালিত হয়। এই দিনে সারা বিশ্বে বন, বৃক্ষ ও বৃক্ষরোপণ ইত্যাদি সংক্রান্ত কার্যক্রমের আয়োজন করা হয়।
২৮ নভেম্বর ২০১২ তারিখে, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ ২১ মার্চকে আন্তর্জাতিক বন দিবস হিসাবে ঘোষণা করে একটি প্রস্তাব জারি করে। যদিও ২০১২ সাল থেকে, ২১ মার্চ আন্তর্জাতিকভাবে বন দিবস হিসাবে পালিত হয়। কিন্তু বহু শতাব্দী ধরে সনাতন হিন্দুধর্মের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যে বন গুরুত্বপূর্ণ। তারপর ভগবান রাম তার প্রতিশ্রুতি পূরণের জন্য মা সীতা ও লক্ষ্মণকে নিয়ে বনবাসে যান বা ঋষি-সাধুদের তপস্যা ও জ্ঞানের সন্ধানে বনে যান।
ধর্মীয় শাস্ত্র ও গ্রন্থেও বনের গুরুত্ব বলা হয়েছে।
ঋষিদের মতে- পৃথিবীর ভিত্তি জল ও বন। তাই পৃথিবী রক্ষার জন্য জল ও বনকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হয়েছে। অরণ্যকে আনন্দময় আখ্যায়িত করে ঋষিরা বলেছেন- 'অরণ্য তে পৃথিবী সয়নমস্তু'। হিন্দুধর্মের গুরুত্বপূর্ণ আশ্রমগুলিতে ব্রহ্মচর্য, বনপ্রস্থ এবং সন্ন্যাসও সরাসরি বনের সাথে সম্পর্কিত।
সনাতন হিন্দুধর্মে বনের গুরুত্ব:
বনজ সম্পদ পূজাযোগ্য: হিন্দু ধর্মের ঐতিহ্যে বৃক্ষ রোপণ ও পূজা সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আজ বৈষয়িক যুগে নির্বিচারে গাছ-গাছালি কাটা হচ্ছে, ফলে বন উজাড় হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী বন উজাড় একটি উদ্বেগজনক হারে অব্যাহত রয়েছে। মানুষ গাছ-গাছালি কেটে বন ধ্বংসে লিপ্ত। কিন্তু জঙ্গল থেকে গাছ কেটে মানুষ কতদিন বেঁচে থাকতে পারবে তা আমরা ভাবি না। যদিও হিন্দু ধর্মের জন্য বনের সম্পদ পূজাযোগ্য। বনজ সম্পদ সুরক্ষিত রাখার জন্য হিন্দু ধর্মেও অনেক ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছে।
ঋষি-দরবেশ এবং ঋষি-মুনি সবাই জপ-তপস্যা ও জ্ঞানের সন্ধানের জন্য বনের দিকে যেতেন কারণ তারা নির্জনতা চান। নির্জনে বসবাস করেই তিনি আধ্যাত্মিক শক্তি অর্জন করতে পারতেন। শুধু পৌরাণিক যুগেই নয়, আধুনিক যুগেও অনেক সাধু ও যোগী তপস্যার জন্য পাহাড় ও বনে বাস করেন।
বৌদ্ধ ধর্মের প্রবর্তক ভগবান গৌতম বুদ্ধও পার্থিব ও পারিবারিক আসক্তি ত্যাগ করে বনে যান। বছরের পর বছর কঠোর তপস্যার পর তিনি বোধিবৃক্ষের নীচে দিব্যজ্ঞান লাভ করেন।
No comments:
Post a Comment