শুধু বিয়েতেই কেন কন্যাদান করা হয়?
ব্রেকিং বাংলা লাইফস্টাইল ডেস্ক, ০৭ জানুয়ারি: হিন্দু ধর্মে, বিয়ের সময় অনেক আচার-অনুষ্ঠান করা হয় যার নিজস্ব স্বতন্ত্র বিশ্বাস রয়েছে। কথিত আছে, যতক্ষণ না সব আচার-অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়, ততক্ষণ বর-কনে স্বামী-স্ত্রীর অধিকার পায় না। হিন্দু ধর্মে, বিবাহের প্রতিটি আচার ও প্রথার নিজস্ব গুরুত্ব রয়েছে তবে এই সমস্ত আচারের মধ্যে কন্যাদানের আচারটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কন্যাদান মানে কন্যা সন্তান দান করা। এই দানকে সকল দানের মধ্যে সবচেয়ে বড় দান বলে মনে করা হয়। এই আচারের অধীনে, প্রত্যেক বাবা তার মেয়েকে বরের হাতে তুলে দেন, এরপর বরকে মেয়ের সমস্ত দায়িত্ব পালন করতে হয়। কন্যাদান একটি আচার যা পিতা ও কন্যার মধ্যে মানসিক সম্পর্ককে প্রতিফলিত করে।
কেন কন্যাদানের আচার করা হয়:
বিয়েতে বরকে ভগবান বিষ্ণুর মর্যাদা এবং কনেকে মা লক্ষ্মীর মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। একই সাথে, বিশ্বাস অনুসারে, যদি আমরা বিষ্ণু রূপে বর সম্পর্কে কথা বলি, বিয়ের সময়, বর মেয়ের বাবাকে আশ্বস্ত করে যে তিনি তার মেয়েকে সারা জীবন খুশি রাখবেন। শুধু তাই নয়, দুজনেই একে অপরের পরিবারের দায়িত্ব পালনে সহযোগিতা করবেন।
হিন্দু ধর্মে কন্যাদানকে একটি মহান দান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এমতাবস্থায় যে বাবা-মা তাদের সন্তানদের দান করার সুযোগ পান তারা খুবই ভাগ্যবান। এটা বিশ্বাস করা হয় যে বাবা-মা তাদের কন্যা দান করেন তাদের জন্য এর চেয়ে বড় পুণ্য আর কিছু নেই। এই দান তাদের জন্য মোক্ষলাভের দরজা খুলে দেয়।
কন্যাদানের আচার কীভাবে শুরু হয়েছিল:
কিংবদন্তি অনুসারে, দক্ষ প্রজাপতি তার কন্যাদের বিবাহ করার পর কন্যাদান করেছিলেন। মহাবিশ্বের ২৭টি নক্ষত্রমণ্ডলীকে বলা হয় প্রজাপতির কন্যা, যাদের বিয়ে হয়েছিল চাঁদের সঙ্গে। তিনিই প্রথম অ্যানি মেয়েদের চাঁদে হস্তান্তর করেছিলেন যাতে মহাবিশ্বের কার্যকারিতা অগ্রসর হতে পারে এবং সংস্কৃতি বিকাশ করতে পারে।
কন্যাদানের গুরুত্ব:
হিন্দু ধর্মীয় গ্রন্থ অনুসারে কন্যাদানকে মহাদানের শ্রেণীতে রাখা হয়েছে। কারণ এর চেয়ে বড় দান আর হতে পারে না। শাস্ত্রে বলা আছে, মেয়ের বাবা-মা যখন সম্পূর্ণ আচার-অনুষ্ঠানের সঙ্গে কন্যাদান করেন, তখন তাদের পরিবারেরও সৌভাগ্য হয়। শুধু তাই নয়, উত্তর ভারতের অনেক রাজ্যেই এই প্রথা প্রচলিত। সেখানে মেয়ের তালু একটি কলশের উপরে রাখা হয় এবং তারপর বর কনের তালুতে তার হাত রাখে। এর পর ফুল, গঙ্গাজল ও পানের পাতা বসিয়ে মন্ত্র পাঠ করা হয়। এরপর বর-কনেকে পবিত্র পোশাক দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয়। এরপর সাত পাক করে কন্যাদানের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়।
No comments:
Post a Comment