এ বছরের শেষের দিকে খুন হয় ৬ জন
ব্রেকিং বাংলা ন্যাশনাল ডেস্ক, ১৭ ডিসেম্বর : ২০২৩ সাল হতে আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। এ বছর এমনই কিছু ঘটনা ঘটেছে, যা আমাদের মনে গেঁথে থাকবে চিরকাল। এমনই এক ঘটনা ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের দেওরিয়া জেলায়। এই ঘটনার নাম দেওয়া হয় দেওরিয়া গণহত্যা। ২ অক্টোবর সকালে এ ঘটনা ঘটে। যেখানে একসঙ্গে খুন হয়েছেন ৬ জন। এর মধ্যে নিহত ৫ জন একই পরিবারের। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে গোটা রাজ্যে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে। এমনকি পুলিশ প্রশাসনও ছিল অসহায়।
ঘটনাটি জানার পর সবার মনে একটাই প্রশ্ন যে কেন এই জঘন্য অপরাধ করা হলো? পুলিশ তদন্তে, ঘটনার পিছনের কারণটি দুই পক্ষের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিরোধ বলে জানা গেছে। ১০ বিঘা জমির বিরোধের জের ধরে ২রা অক্টোবর সকালে গুলি ও ধারালো অস্ত্রের শব্দ শুনে রুদ্রপুর থানা এলাকার ফতেপুর গ্রামের লেহদা টোলা কেঁপে ওঠে।
কিছুক্ষণের মধ্যেই স্থানীয় লোকজন জানতে পারে ৬ জনকে খুন করা হয়েছে। তাদের একজন ছিলেন প্রেমচন্দ্র যাদব। বাকি ৫ জন সত্যপ্রকাশ দুবে পরিবারের সদস্য। এই ঘটনা দেওরিয়া থেকে রাজধানী লখনউ পর্যন্ত আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। পুরো গ্রামটি সেনানিবাসে পরিণত হয়। যে বাড়িতে ঘটনাটি ঘটেছে সেখান থেকে একে একে মৃতদেহ বের করা হয়েছে। এ দৃশ্য দেখে সবার প্রাণ কেঁপে ওঠে।
প্রেম যাদব এবং সত্যপ্রকাশ দুবের পরিবারের মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে পুরনো শত্রুতা ছিল। প্রেম যাদবও প্রাক্তন জেলা পঞ্চায়েত সদস্য ছিলেন। প্রেমচাঁদ যাদবকে ২ অক্টোবর ভোরে ফতেপুর গ্রামের লেহরা টোলায় খুন করা হয়। খুনের সন্দেহ সরাসরি সত্যপ্রকাশ দুবের পরিবারের ওপর উঠেছিল। কারণ প্রেম যাদবের মৃতদেহ তার বাড়ির কাছে পড়ে থাকতে দেখা যায়। এই ক্ষোভে মৃত প্রেম যাদবের পরিবার এবং তাঁর সমর্থক সত্যপ্রকাশ দুবের বাড়িতে গুলি, ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালানো হয়।
সত্যপ্রকাশ দুবের বাড়িতে যাকে পাওয়া গেছে তাকেই খুন করেছে মৃত যাদবের পরিবারের সদস্যরা। এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই সত্যপ্রকাশ, তার স্ত্রী কিরণ দুবে, দুই মেয়ে সালোনি ও নন্দিনী এবং ছেলে দীপেশ ওরফে গান্ধী মারা যায়। এক ছেলে আনমোল গুরুতর আহত হয়। তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। যেখানে তার জীবন রক্ষা পায়। একই সময়ে এক পুত্র পুজোর জন্য বালিয়ায় গিয়েছিল। এ কারণে তার জীবনও রক্ষা পায়।
মৃত প্রেম যাদব ও দুবের পরিবারের পাঁচ সদস্যের চিতা একত্রে উত্তোলন করায় গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ঘটনাস্থলে রক্ত ছড়িয়ে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মুখে বেশ কয়েকদিন নীরবতা ছিল। পুলিশ অবিলম্বে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে শুরু করে। পুলিশ উভয় পক্ষের ৩৩ জনের নাম ও অজ্ঞাতপরিচয় ৫০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। পুলিশ প্রচুর লোককে বেশি লোককে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বন্দুক, লোহার রড, বেলচা ও লাঠিও উদ্ধার করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে এই গোটা গণহত্যার দিকে নজর রাখছিলেন মুখ্যমন্ত্রী যোগী নিজেই।
No comments:
Post a Comment