মহাত্মা গান্ধীর চরকার অজানা কথা - Breaking Bangla |breakingbangla.com | Only breaking | Breaking Bengali News Portal From Kolkata |

Breaking

Post Top Ad

Saturday, 30 September 2023

মহাত্মা গান্ধীর চরকার অজানা কথা

 



মহাত্মা গান্ধীর চরকার অজানা কথা 



ব্রেকিং বাংলা ন্যাশনাল ডেস্ক, ৩০ অক্টোবর : "আপনি আমাদেরকে তলোয়ার ছাড়া এবং ঢাল ছাড়াই স্বাধীনতা দিয়েছিলেন, আপনি, সবরমতীর সাধক, বিস্ময়কর কাজ করেছেন।" গান্ধীজিকে নিয়ে কবি প্রদীপের লেখা এই গানটি আমাদের সেই পুরোহিতের অতিপ্রাকৃত শক্তি খুঁজে পেতে অনুপ্রাণিত করবে। শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে অহিংসা, যার পিছনে দাঁড়িয়েছিল গোটা দেশ। এর উদ্দেশ্য ছিল একটি ব্রিটিশ সরকারকে উৎখাত করা। যার সামরিক শক্তি ছিল অপরাজেয়।


 বর্বর অত্যাচারী ব্রিটিশ সরকার বন্দুকের জোরে গোটা পৃথিবীকে দাস বানিয়েছিল। এত বিশাল শক্তির বিরুদ্ধে মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে অহিংস সত্যাগ্রহের সবচেয়ে কার্যকর অস্ত্র হয়ে উঠেছিল চরকা। যদিও ১৯১৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে মহাত্মা গান্ধীর আগমনের আগেও, পাঞ্জাব এবং গুজরাটের কিছু অংশে চরখায় সুতা কাটা হত, কিন্তু সেই সময়ে এটি গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর জন্য জীবিকা নির্বাহের একটি উপায় হিসাবে বিবেচিত হত।


বাপু এটিকে অহিংসা, আত্মনির্ভরশীলতা এবং স্বনির্ভরতার প্রতীকে পরিণত করেছিলেন, যা দেশবাসীর মধ্যে নতুন প্রাণের শ্বাস দেয়। এই চরকা দেশবাসীকে তাদের অপার শক্তি ভুলে নতুন শক্তি নিয়ে ব্রিটিশ শাসনের বিরোধিতা করার প্রতীক দিয়েছে। বাপুর এই চরকা হয়ে ওঠে দেশের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ও স্বনির্ভরতার প্রতীক। চরকার মতো একটি সাধারণ জিনিস মহাত্মা গান্ধীর হাতে আসার সাথে সাথেই ঘুমন্ত দেশে নতুন প্রাণ শ্বাস নেওয়ার এবং বিশ্ব মঞ্চে নতুন শক্তি নিয়ে দাঁড়ানোর একটি ঐশ্বরিক অস্ত্র হয়ে উঠেছে।


 গান্ধীজি চরখাকে কতটা দেশের স্বাধীনতার জন্য একটি অমূলক ধর্মগ্রন্থ বলে মনে করতেন তা তাঁর একটি ঠিকানা থেকে অনুমান করা যায়। কেউ একজন তাকে জিজ্ঞেস করেছিল চরখার ওপর এত জোর কেন? এর জবাবে তিনি যা বলেছিলেন তা আজও স্বনির্ভর ভারতের জন্য প্রাসঙ্গিক।


 বাপু বলেছিলেন, "দেশের ৪০ কোটি মানুষ যদি চরকায় সুতা কাটে, তাহলে তারা লক্ষাধিক মানুষের ব্যবহারের জন্য খাদির সুতা কাটতে পারে। কয়েক লাখ লোকের কলকারখানায় কর্মসংস্থান হবে, কিন্তু চরখা প্রতিটি নাগরিককে সহায়তা দেবে। এর মানে শোষণ থেকে মুক্তি পাবে দেশ। সাথে হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে ঐক্য। এর মানে বেকারত্বের অবসান।" বাপুর আহ্বানে, সমগ্র দেশ চরকায় সুতা কাটতে শুরু করে যা স্বদেশী আন্দোলন এবং আইন অমান্যের শক্তিশালী ভিত্তি হয়ে ওঠে। এই শক্তিতে বিশ্বের বৃহত্তম সামরিক শক্তিও শেষ পর্যন্ত পরাজিত হয়েছিল।


 মহাত্মা গান্ধীর এই চরকাটি ছিল ব্রিটিশদের অহিংস ও শান্তিপূর্ণভাবে দেওয়া সবচেয়ে বড় আঘাত। দাসত্বের যুগে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন ভারত থেকে তুলা ও কাঁচামাল ইংল্যান্ডে নিয়ে যেত এবং সেখানে কাপড় তৈরি করে আবার ভারতে বিক্রি করত। বাপুর ডাকে যখন সারা দেশ চরকায় সুতা কাটতে শুরু করে, তখন এটা ছিল ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, যা ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ফলাফলকে প্রতিফলিত করতে শুরু করেছিল বহু আগেই। এর মাধ্যমে ভারতীয়রা অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা উপলব্ধি করে যখন তারা দাসত্বের যুগে নিজেদের অসহায় ও দুর্বল মনে করত। তাই বাপুর চরকা শুধু সুতা কাটার মাধ্যমই ছিল না, স্বাধীনতা সংগ্রামের সবচেয়ে বড় প্রতীকও ছিল।

No comments:

Post a Comment

Post Top Ad