র্যাগিং কাণ্ডে এবার বিশ্ববিদ্যালয় নিল এই সিদ্ধান্ত
নিজস্ব সংবাদদাতা, কলকাতা, ১৯ আগস্ট : যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিং কাণ্ডে এক ছাত্র স্বপ্নদীপের মৃত্যুর পর ঘুম ভেঙেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অবশেষে যাদবপুরের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্রদের জন্য আলাদা হোস্টেলের ব্যবস্থা করেছে। গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাগিং প্রতিরোধ কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ডিন অফ স্টুডেন্টস রজত রায় এই বিষয়ে নির্দেশিকা জারি করেছেন। স্বপ্নদীপের মৃত্যুর ঘটনায় আরও তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মোট গ্রেফতারকৃত আসামির সংখ্যা বেড়ে ১২ জনে দাঁড়িয়েছে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউ বয়েজ হোস্টেল এখন থেকে শুধুমাত্র প্রথম বর্ষের স্নাতক ছাত্রদের জন্য সংরক্ষিত। চলতি শিক্ষাবর্ষ ২০২৩-২৪ থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নিউ বয়েজ হোস্টেলে বসবাসরত সিনিয়রদের অন্য হোস্টেলে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শনিবার জারি করা নির্দেশনায় শিক্ষার্থীদের ডিন বলেছেন, নিউ বয়েজ হোস্টেলের সিনিয়র শিক্ষার্থীদের কোন হোস্টেলে পাঠানো হবে তা শিগগিরই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
লক্ষণীয় যে প্রথম বর্ষের ছাত্রদের জন্য আলাদা হোস্টেলের বিধান অনেক আগেই ইউজিসির নিয়মে উল্লেখ করা হয়েছে, কিন্তু কিছু অজানা কারণে, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের এই নিয়ম মানা হয়নি। অবশেষে যাদবপুরের স্নাতক প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রীদের জন্য আলাদা হোস্টেলের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল হোস্টেলের তৃতীয় তলা বিল্ডিং থেকে পড়ে মৃত্যু হয় স্নাতক প্রথম বর্ষের এক ছাত্র স্বপ্নদীপের। কীভাবে ওই ছাত্র তৃতীয় তলা থেকে পড়ে যায় তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বাড়ছে র্যাগিংয়ের অভিযোগ। পুরো ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ। লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শুক্রবার রাতে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। যাদবপুরে ওই ছাত্রের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্র-ছাত্রী সহ মোট ১২ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
সন্দেহভাজন তালিকায় অন্তর্ভুক্ত একজন বর্তমান ও দুই প্রাক্তন শিক্ষার্থীকে শুক্রবার সকাল থেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। রাতেই তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হোস্টেলে নতুন প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, 'হোস্টেলের কয়েকজন সিনিয়র তাদের র্যাগিং করতেন'।
নিহত ছাত্রও ওই একই ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছে কি না এবং অন্য কেউ এই নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত কিনা তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছিলেন যে ৯ আগস্ট রাতে পড়ে যাওয়ার পরে মৃত ছাত্রকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় হোস্টেলে একটি 'জরুরি বৈঠক' অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
সেই সভার 'হোস্ট' ছিলেন একজন অভিযুক্ত সৌরভ চৌধুরী (বর্তমানে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং পুলিশ হেফাজতে রয়েছে)। পুলিশকে কী বলবেন সেটাই ছিল আলোচনার মূল বিষয়। তবে ধরা পড়ার পর তাঁদের বক্তব্যে অনেক অসঙ্গতি পাওয়া গেছে।
No comments:
Post a Comment