রূপেশ্বর মহাদেব মন্দির, এখানে পুজো করলে নেতিবাচক শক্তির অবসান হয়
মৃদুলা রায় চৌধুরী, ৩১ আগস্ট: শ্রী রুপেশ্বর মহাদেব,যিনি ৮৪ মহাদেবের মধ্যে ৬২ তম স্থানে রয়েছেন। এখানে পূজো করলে নেতিবাচকতা দূর হয়। এই মন্দির রয়েছে উজ্জয়িনীর মগরমুহা থেকে সিংহপুরী যাওয়ার সময় কুটুম্বেশ্বর মহাদেব মন্দিরের পূর্ব ডানদিকে।অতি প্রাচীন শ্রী রূপেশ্বর মহাদেবের মন্দির। মন্দিরের পুরোহিত পণ্ডিত শশাঙ্ক ত্রিবেদী জানান, মন্দিরে ভগবান শিবের দুটি শিবলিঙ্গ স্থাপন করা হয়েছে, যেগুলো কালো ও সাদা পাথরের তৈরি। পণ্ডিত জানান, একটি জলাশয়ে সাদা উজ্জ্বল পাথরের শিবলিঙ্গ রয়েছে, যা পুজো করলে ইতিবাচক শক্তি আসে, সামনে কালো পাথরের শিবলিঙ্গ রয়েছে, যা পুজো করলে নেতিবাচক শক্তির অবসান হয়।
পণ্ডিত শশাঙ্ক ত্রিবেদী বলেন, এটা বিশ্বাস যে শুধুমাত্র ভগবানের দর্শন করলেই নেতিবাচক শক্তি নষ্ট হয়ে যায় এবং আমরা ইতিবাচক শক্তি পাই। মন্দিরে জলাভিষেক প্রক্রিয়া হয় প্রতিদিন বিশেষ পূজো-অর্চনার মাধ্যমে। নিয়মিত পূজো আরতির পাশাপাশি মন্দিরে ভগবানকে ভোগও দেওয়া হয়। মন্দিরে শ্রী রুপেশ্বর মহাদেবের সাথে সবচেয়ে প্রাচীন আশীর্বাদ মাতাও বসে আছেন, যিনি এখানে মহিষাসুর রামদিনী রূপে দর্শন দিচ্ছেন।
গর্ভগৃহে ঢোকার আগে মেঝেতে শিব-পার্বতীর একটি প্রাচীন মূর্তি রয়েছে, পাশেই অবতারের প্রাচীন মূর্তি রয়েছে। এর সামনে পাথরের মাঝখানে একটি বৃত্ত তৈরি করা হয়েছে। মেঝেতে একটি বিষ্ণুর মূর্তি রয়েছে এবং কাছাকাছি কোনও দেবদেবীর মূর্তি রয়েছে। বাকী দেয়ালে মহিষাসুর মর্দিনী দেবীর একটি অত্যন্ত শৈল্পিক ও আকর্ষণীয় সাড়ে পাঁচ ফুট লম্বা একটি শ্বেতপাথরের মাঝখানে ঢাল, ধনুক প্রভৃতি অস্ত্রসহ স্থাপিত, যার দু পাশে মূর্তি রয়েছে। শিব-পরিবার সহ ব্রহ্মা, বিষ্ণু প্রভৃতি খোদাই করা আছে।
এটি শ্রী রূপেশ্বর মহাদেবের কাহিনী :
পদ্মকল্পে দেবী পার্বতীকে পদ্মরাজের কাহিনী বর্ণনা করতে গিয়ে মহাদেব বলেছিলেন যে রাজা শিকার করতে গিয়ে হাজার হাজার বন্য প্রাণীকে হত্যা করেছিলেন। তারপর খুব মনোরম বনে একা আশ্রমে প্রবেশ করলেন। সেখানে তিনি সুন্দরী এক কন্যাকে দেখতে পান। রাজা মুনিবরের কথা জিজ্ঞেস করলেন। তিনি বলেন, আমি কণ্ব ঋষিকে আমার পিতা মনে করি। রাজা সেই মিষ্টভাষী মেয়েকে বিয়ে করার প্রস্তাব দিলেন।
ওই কন্যা রাজাকে ঋষির আগমন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে বলেন, কিন্তু রাজা তা করেন নি। রাজা গান্ধর্ব পদ্ধতিতে ওই কন্যাকে বিয়ে করলেন। ঋষি কণ্ব ফিরে এলে তিনি কন্যা ও রাজা দুজনকেই এই কুরুপের অভিশাপ দেন, কিন্তু তাঁর কন্যাটি বলেন যে আমি নিজেই রাজাকে স্বামী হিসেবে বেছে নিয়েছি। এরপর অভিশাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ঋষি দুজনকেই মহাকালবনে পাঠান, যেখানে রূপ-দানকারী লিঙ্গ দেখে দুজনেই সুদর্শন হয়ে উঠলেন। এই লিঙ্গটি রূপেশ্বর নামে বিখ্যাত হয়।
No comments:
Post a Comment