রাষ্ট্রদ্রোহ আইন হল বাতিল, জেনে নিন এর ইতিহাস
ব্রেকিং বাংলা ন্যাশনাল ডেস্ক, ১২ অগাস্ট : 'ভারতে এখন রাষ্ট্রদ্রোহ আইন বাতিল করা হবে' স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ স্বয়ং লোকসভায় এই ঘোষণা করেছেন। আসলে অনেক বিরোধী দল দীর্ঘদিন ধরেই এই আইন বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছিল। চলুন জেনে নেই এই আইনটি সম্পর্কে-
রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের ইতিহাস:
ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪A ধারা নামে রাষ্ট্রদ্রোহ আইনও জানি। এই আইনটি ১৭ শতকে ব্রিটিশরা তৈরি করেছিল। যাইহোক, এই আইনটি মূলত ১৮৩৭ সালে ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ এবং রাজনীতিবিদ থমাল ম্যাকাওলে দ্বারা খসড়া করা হয়েছিল। সেই সময়ে ব্রিটিশ সরকার এই আইনটি সেইসব লোকদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছিল, যাদের সরকারের প্রতি ভালো মতামত বা ধারণা ছিল না এবং জনসমক্ষে এর বিরুদ্ধে খোলাখুলি কথা বলেছিল।
বৃটিশ রাজত্বের পর দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও ভারতীয় দণ্ডবিধিতে এই আইন অক্ষত ছিল। তবে যারা সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলে তাদের ওপর আর চাপিয়ে দেওয়া হয়নি। বরং, এই ধারাটি তাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছিল যারা বক্তৃতা, লেখা, অঙ্গভঙ্গি বা চিহ্নের মাধ্যমে বা অন্য কোনও উপায়ে ঘৃণা ছড়ায়, বা ভারতীয় আইন বা সরকারী আদেশের অবমাননা করে বা আন্দোলন করে বা তাদের মধ্যে অসন্তোষের অনুভূতি জাগ্রত করার চেষ্টা করে। তাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয়েছে।
এই আইনটি এদেশে প্রথম ১৮৯৭ সালে বাল গঙ্গাধর তিলকের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছিল। এছাড়া ১৯২২ সালের ১৯ মার্চ মহাত্মা গান্ধীর বিরুদ্ধেও এই আইন ব্যবহার করা হয়। সেই সঙ্গে পণ্ডিত জওহরলাল নেহেরু এবং ভগৎ সিং-এর বিরুদ্ধেও এই আইন ব্যবহার করা হয়েছিল।
এই দেশ কী দেশদ্রোহিতার থেকে আলাদা:
রাষ্ট্রদ্রোহ রাষ্ট্রদ্রোহ থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। যে রাষ্ট্রদ্রোহ আইন শুধুমাত্র সেই সমস্ত লোকদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যেতে পারে যারা দেশের বিরুদ্ধে কোনও কার্যকলাপে জড়িত বা সন্ত্রাসী মতাদর্শ সহ দেশের বিরুদ্ধে কাজ করছে এমন কোনও সংগঠনের সাথে যোগাযোগ রয়েছে। প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগকারী ব্যক্তি। একই সঙ্গে যুদ্ধ বা সংশ্লিষ্ট কাজে প্রতিপক্ষ দেশকে সমর্থন করাও রাষ্ট্রদ্রোহের আওতায় পড়ে। এতে দোষী প্রমাণিত হলে অভিযুক্তের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। যেখানে রাষ্ট্রদ্রোহিতার শাস্তি হালকা।
No comments:
Post a Comment