এই শঙ্খটি খুবই বিশেষ এবং বিরল, জেনে নিন এর পেছনের রহস্য
মৃদুলা রায় চৌধুরী, ৩০ জুলাই :সনাতন ধর্মে শঙ্খের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। কথিত আছে যে শঙ্খ ফুঁক দেওয়ার ফলে বায়ুমণ্ডল শুদ্ধ হয়, শঙ্খের ধ্বনি যতদূর যায়, সেখানে ইতিবাচক শক্তি সঞ্চারিত হয়। শঙ্খকে বিজয়, শান্তি, সমৃদ্ধি এবং দেবী লক্ষ্মীর প্রতীক মনে করা হয়। বেদ পুরাণেও শঙ্খের উল্লেখ আছে। পাঞ্চজন্য শঙ্খ মহাভারতেও ব্যবহৃত হয়েছিল যখন বিষ্ণু কৃষ্ণের অবতার গ্রহণ করেছিলেন। প্রধানত তিন ধরনের শঙ্খ পাওয়া যায়। দক্ষিণাবৃত্তি শঙ্খ, মধ্যবৃত্তি ও বামাবৃত্তি শঙ্খ। সবার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শঙ্খ হল ভগবান বিষ্ণুর পঞ্চজন্য শঙ্খ। আসুন জেনে নেই এই শঙ্খের বিশেষত্ব সম্পর্কে-
পাঞ্চজন্য শঙ্খের পৌরাণিক বর্ণনা:
মহাভারত অনুসারে এই শঙ্খের উদ্ভব হয়েছিল সমুদ্র মন্থনের সময়। একটি কিংবদন্তি অনুসারে, ভগবান শ্রীকৃষ্ণের গুরুপুত্র পুনর্দত্তকে একটি রাক্ষস অপহরণ করেছিল। ভগবান শ্রী কৃষ্ণ যখন এই কথা জানতে পারলেন, তিনি তাকে বাঁচাতে রাক্ষসদের নগরীতে গেলেন।সেখানে গিয়ে তিনি দেখলেন যে, শঙ্খের ভেতরে রাক্ষস ঘুমিয়ে আছে।
কৃষ্ণ রাক্ষসকে বধ করে শঙ্খটি নিজের কাছে রেখেছিলেন কিন্তু তিনি জানতে পারলেন যে পুনর্দত্ত যমলোকে গেছেন, শ্রীকৃষ্ণও সেই দিকে গেলেন কিন্তু যমদূতরা তাঁকে ভেতরে যেতে দেয়নি। এরপর শ্রীকৃষ্ণ শঙ্খ বাজালেন যাতে সমগ্র যমলোক কেঁপে ওঠে। এরপর যমরাজ স্বয়ং কৃষ্ণের কাছে পুনর্দত্তের আত্মা ফিরিয়ে দেন। শঙ্খ ও পুনর্দত্ত নিয়ে কৃষ্ণ তাঁর গুরুর কাছে আসেন। শ্রী কৃষ্ণকে শঙ্খটি দেওয়ার সময় তাঁর গুরু বলেছিলেন যে এই শঙ্খটি কেবল তোমার জন্য তৈরি করা হয়েছে।
কথিত আছে, পাঁচটি শঙ্খের শব্দে কৌরবদের মধ্যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছিল। কৃষ্ণ যখন এই শঙ্খ বাজাতেন, তখন এর আওয়াজ বহু দূর বেজে উঠত। পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, এই শঙ্খের শব্দ সিংহের গর্জনের চেয়েও বেশি ছিল।
এই শঙ্খের বৈশিষ্ট্য:
পাঁচজন্য শঙ্খ ছিল ১৪টি রত্নের মধ্যে ষষ্ঠ যা সমুদ্র মন্থনে প্রাপ্ত হয়েছিল।
এই শঙ্খটিকে খ্যাতি এবং বিজয়ের প্রতীক হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
এই শাঁখ ঘরে রাখলে বাস্তু দোষ দূর হয়।
শঙ্খ বাজিয়ে , শ্রী কৃষ্ণ পুরনো যুগের অবসান এবং নতুন যুগের সূচনা করেছিলেন।
এই শঙ্খ দেবী লক্ষ্মীর খুব প্রিয়। এটি বাড়িতে থাকলে অন্ন ও অর্থের কোনো অভাব হয় না।
No comments:
Post a Comment