পঞ্চায়েত নির্বাচনে আগে ফের সহিংসতা, ৩বিজেপি কর্মী নিহত
নিজস্ব সংবাদদাতা, কোচবিহার, ০৭ জুলাই : বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচার শেষ হয়েছে। শনিবার ভোট কিন্তু ভোটের আগে কোচবিহার, মুর্শিদাবাদ সহ অনেক জেলায় সহিংস ঘটনা ঘটছে। অভিযোগ উঠেছে যে বৃহস্পতিবার রাতে দিনহাটায় তৃণমূল সমর্থিত দুষ্কৃতীদের গুলিতে তিন বিজেপি কর্মী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও এক বিজেপি কর্মী। বিজেপি টিএমসিকে অভিযুক্ত করেছে। যদিও শাসক দলের পক্ষ থেকে সব অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে দিনহাটা ২ ব্লকের বামনহাট ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের কলমতি এলাকায়। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে সাহেবগঞ্জ থানার পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে খবর, হামলার সঙ্গে জড়িত এক অপরাধীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
দলের কর্মীদের গুলি চালানোর কথা শুনে দিনহাটা মহকুমা হাসপাতালে পৌঁছেন বিজেপির কোচবিহার জেলা কমিটির সদস্য জয়দীপ ঘোষ। আহত বিজেপি কর্মীদের শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর নেওয়ার পর তিনি শাসক তৃণমূলের বিরুদ্ধে গুলি চালান।
তিনি বলেন, “প্রচারণা শেষে আমাদের কর্মীরা প্রার্থীর বাড়ির সামনে বসে ছিলেন। হঠাৎ তৃণমূল সমর্থিত দুষ্কৃতীরা বাইকে করে এসে গুলি চালাতে শুরু করে। আমাদের তিন কর্মী গুলিবিদ্ধ ও একজন আহত হয়েছেন। তার মাথায় আঘাত রয়েছে। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ ডি ভৌমিক বলেন, “এসব ঘটনা কাম্য নয়। পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রক্রিয়া শান্তিপূর্ণভাবে চলছে। গীতালদহ ও বেতাগুড়ি ছাড়া দিনহাটার কোথাও থেকে কোনও বিশৃঙ্খলার খবর নেই। বামনহাটের অনেক বিজেপি নেতা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।
স্থানীয় বিজেপি কর্মী পীযূষ বর্মনের কথায়, “আমাদের অর্জুন বর্মণ, মিলন বর্মণ এবং চন্দ্রকান্ত বর্মণ নামে তিনজন কর্মীকে গুলি করা হয়েছে। আহত হয়েছেন নারারণ বর্মণ নামে আরেক শ্রমিক। আমরা যখন প্রচার করে বাড়ি ফেরার আগে এক জায়গায় বসে ছিলাম। তখন বাইকে করে কয়েকজন দুর্বৃত্ত এসে হামলা চালায়।" এর আগে ১৭ই জুন গভীর রাতে কোচবিহারের দিনহাটায় শম্ভু দাস (২৭) নামে এক বিজেপি কর্মীকে খুন করার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। এই পঞ্চায়েত নির্বাচনে টিয়াধর থেকে বিজেপি প্রার্থী শম্ভুর বৌদি বিশাখা দাস।
এরপর গত ২৭ জুন দিনহাটায় খুন হন আরও একজন। স্থানীয় সূত্রে খবর, গীতালদহ-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের জারিধরলা এলাকায় তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছেন এক তৃণমূল সমর্থক। পুলিশ জানায়, নিহতের নাম বাবু হক (৩৪)। তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ।
এই ঘটনার বিষয়ে, ক্ষমতাসীন দল বিজেপির বিরুদ্ধে বাংলাদেশ থেকে অপরাধীদের এনে পরিকল্পিত হামলা চালানোর অভিযোগ করেছে। প্রশ্ন উঠেছে বিএসএফের ভূমিকা নিয়েও। জবাবে বিজেপি দাবি করেছে, ঘটনাটি তৃণমূল কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ দলাদলির ফল।
পরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক দাবি করেন যে নিহত ব্যক্তি বাংলাদেশের নাগরিক এবং তিনি আসলে একজন 'আন্তর্জাতিক অপরাধী'। বাবু হত্যা মামলায় বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ থেকে দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আটকের পর বাংলাদেশ বিজিবি তাকে বিএসএফের কাছে হস্তান্তর করে।
No comments:
Post a Comment