কিডনি বিক্রি করতে গিয়ে সাইবার ঠগের জালে এক মহিলা
ব্রেকিং বাংলা ন্যাশনাল ডেস্ক, ০৯ জুলাই : আর্থিক সমস্যা বা অন্যান্য বাধ্যবাধকতায় আটকে পড়া মানুষ পালানোর জন্য কী করেন আর করেন না। সম্প্রতি এমনই একটি ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে যেখানে ঋণ শোধ করতে নিজের কিডনি বিক্রি করছেন এক মহিলা। দুর্ঘটনার কারণে সূর্যা নামে এক মহিলা ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ করতে পারেননি। এ কারণে ৫ লাখ টাকা ঋণ পরিশোধে তাকে বেশ সমস্যায় পড়তে হয়েছে। কোনো উপায় না আসায় তিনি কিডনি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। এদেশে কিডনি বিক্রি করা অপরাধ জেনেও ক্রেতা খুঁজতে অনলাইনে গিয়েছিলেন ওই মহিলা।
ফেসবুকসহ অনেক জায়গায় সার্চ করে ‘কিডনি’ ‘সেল’ করে কিডনি বিক্রির চেষ্টা করেন ওই মহিলা। আল জাজিরার প্রতিবেদন অনুযায়ী, তিনি একটি ফেসবুক পেজে তার যোগাযোগের নম্বর রেখে গেছেন। পরে ওই মহিলা ডাক্তার স্যান্ডির ফোন পান। চিকিৎসকের দাবি, তিনি দিল্লির কাছে গাজিয়াবাদের গিত্রোহ মেডিক্যাল সেন্টারে কথা বলছিলেন।
কিডনির জন্য এক কোটি টাকা দেবেন বলে আশ্বস্ত করেন ওই চিকিৎসক। এটি এত বিশাল পরিমাণ ছিল যা মহিলাটিকে ঋণ পরিশোধ করতে এবং পরিবারকে সমর্থন করতে সহায়তা করতে পারে। তবে, তিনি একজন ডাক্তার নন, একজন প্রতারক ছিলেন, যিনি ডোনার কার্ড তৈরির জন্য অর্থ দাবি করতে শুরু করেছিলেন। তিনি ওই মহিলাকে বলেন, কিডনি বিক্রি করতে হলে প্রথমে একটি ডোনার কার্ড তৈরি করা হবে, যার জন্য ফি নেওয়া হবে।
এরপর মহিলা চূড়ান্ত অর্থপ্রদান না করে এবং ডোনার কার্ড পরীক্ষা করা শুরু করেন। তিনি মোহন ফাউন্ডেশনের (মাল্টি অর্গান হার্ভেস্টিং এইড নেটওয়ার্ক) নম্বর পেয়েছিলেন যা অঙ্গদানের প্রচার করে এবং ডোনার কার্ড জারি করে। এখান থেকে তিনি জানতে পারলেন, যারা অঙ্গ দান করতে চান তাদের ডোনার কার্ডের জন্য কোনো চার্জ দিতে হবে না।
ফাউন্ডেশন মহিলাকে বলে যে ডোনার কার্ডের জন্য কোনও অর্থ প্রদান করা হয় না এবং তিনি নিজেকে সাইবার প্রতারকের শিকার হওয়া থেকে বাঁচাতে পেরেছেন। এরপর আরেকটি ঘটনায় আরেকজন মহিলা এক সাইবার ঠগ ডক্টর করণের সাথে কথা বলে জানতে চান একটি কিডনিতে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা সম্পর্কে? প্রতারক উত্তর দেয় যে যতদিন ওই মহিলার একটি কিডনি আছে ততদিন বেঁচে থাকতে পারবেন তিনি।
ওই মহিলা ডোনার কার্ডের জন্য অর্থ প্রদান করেন ও তাঁদের জালে পড়ে যান। যদিও এরপর মোহন ফাউন্ডেশনের নির্দেশে সূর্য ও অন্যান্য ভুক্তভোগীরা চেন্নাই পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন। আজকাল, ফেসবুকের মতো একটি বিশাল সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম মানুষের অঙ্গ ক্রয়-বিক্রয়ের কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে। এর সুযোগ নেয় সাইবার অপরাধীরা।
No comments:
Post a Comment