কংগ্রেস প্রার্থীর বাড়িতে বোমা হামলা, রাজ্যপাল এলেন সেখানে
নিজস্ব সংবাদদাতা, কোচবিহার, ০১ জুলাই : পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিভিন্ন স্থানে অশান্তি ও বিশৃঙ্খলার অভিযোগ রয়েছে। শুধু দলীয় কর্মী-সমর্থকদের ওপরই নয়, প্রার্থীদের ওপরও হামলার অভিযোগ রয়েছে। এবার কোচবিহারে কংগ্রেস প্রার্থীর বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা হামলা। শুধু বোমাবাজি নয়, প্রার্থীর বাড়িতেও আগুন দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এদিকে, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস দিনহাটা পৌঁছে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে দেখা করেছেন। শুক্রবার রাতে দিনহাটার ওক্রাবাদি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বালাকান্দি গ্রামে ৬/২৬১ নম্বর বুথের কংগ্রেস প্রার্থীর বাড়িতে হামলা হয়। কংগ্রেসের অভিযোগ, তৃণমূল সমর্থিত দুষ্কৃতীরা এই হামলা চালিয়েছে।
বাড়িটি নির্মাণাধীন থাকলেও বড় ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। নির্মাণাধীন বাড়ির এক তলায় তিনটি ঘর পুড়ে গেছে।ঘটনায় এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের পর স্থানীয় লোকজন আগুন নেভানোর কাজে নেমে পড়ে। কোচবিহারে এসে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস বলেছিলেন যে কোনও রাজনৈতিক দলের জন্য তাঁর দরজা খোলা রয়েছে। শনিবার সকালে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে কোচবিহার সার্কিট হাউসের সামনে জড়ো হন বিক্ষোভকারীরা।
এতে বিজেপি বিধায়কদের একটি প্রতিনিধিদলের পাশাপাশি 'আক্রান্ত' বিজেপি কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানে কংগ্রেস ও সিপিএম নেতারাও ছিলেন। একে একে সবাই শাসক দলের বিরুদ্ধে রাজ্যপালের কাছে অভিযোগ করেন। রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করার পর সকলেই সন্তোষ প্রকাশ করেন।
তৃণমূলের হাতে গ্রেফতার পঞ্চায়েত প্রধান তাপস দাসের স্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে দিনহাটা হাসপাতালে এসেছিলেন রাজ্যপাল। এ বারও তৃণমূলের প্রার্থী তাপস দাস। তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন। একটি পুরনো মামলায় ওয়ারেন্ট থাকায় গতকাল তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাপস দাসের স্ত্রীকে দিনহাটা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। রাজ্যপাল তাঁর সঙ্গে দেখা করেন।
কোচবিহার সার্কিট হাউস থেকে বেরিয়ে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকও বলেছিলেন যে তিনি রাজ্যপালের কথায় আশ্বস্ত হয়েছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ' তৃণমূলের লোকেরা স্পষ্ট বুঝতে পেরেছে যে এখানে তাদের পায়ের নিচের মাটি সরে গেছে। সেই কারণেই বারবার জেলায় আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।' তিনি বলেন, কোচবিহারে তাদের কোনো মূল্য নেই। এ জন্য মুখ্যমন্ত্রী তার পুলিশ দিয়ে দমন করে ক্ষমতায় হাতছানি দেওয়ার চেষ্টা করছেন। আমরা রাজ্যপালকে সব বলেছি।
অন্যদিকে, রাজ্যপালের ভূমিকায় রাজনীতি দেখছে শাসক দল তৃণমূল। লক্ষণীয়, শনিবার জেলা কমিশনার থেকে শুরু করে জেলা পুলিশ সুপার, শাসক দলের কোনও প্রতিনিধিকে রাজ্যপালের আশেপাশে দেখা যায়নি।
তৃণমূলের মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় বলেন, কোচবিহার সীমান্ত এলাকায় তৃণমূলকে প্রচারে বাধা দিচ্ছে বিএসএফ। সে ক্ষেত্রে রাজ্যপালের ভূমিকা কী হবে?" তৃণমূল নেতার দাবি, বিজেপি ফেডারেল সরকার ভাঙতে চায়। কেন্দ্রীয় সংস্থার মাধ্যমে তৃণমূলকে নানাভাবে হেনস্থা করার চেষ্টা করা হয়েছে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে রাজ্যপালের তৎপরতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল।
No comments:
Post a Comment