আহত তৃণমূল নেতার সঙ্গে দেখা করলেন রাজ্যপাল
নিজস্ব সংবাদদাতা, কোচবিহার, ০২ জুলাই : রাজ্যপালের সফরের মধ্যেই রাজ্য পঞ্চায়েত নির্বাচনের সহিংসতার মধ্যে কোচবিহারের গীতালদহ উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের আঞ্চলিক সভাপতির সঙ্গে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। গুরুতর জখম অবস্থায় তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস রবিবার সকালে নির্যাতিতা টিএমসি নেতাকে দেখতে বেসরকারি হাসপাতালে পৌঁছেছেন। এদিকে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনায় টিএমসি এবং আইএসএফ সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন।
চন্দ্রকোনার কৃষ্ণপুরে আইএসএফ-তৃণমূল কংগ্রেসের মধ্যে দ্বন্দ্ব উত্তপ্ত। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ৫ জনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ বাহিনী উপস্থিত রয়েছে।
তৃণমূলের অভিযোগ, এদিন সকালে তৃণমূলের এক প্রার্থী কৃষ্ণপুর এলাকায় প্রচারে যাওয়ার সময় আইএসএফ কর্মীরা তাঁকে অতর্কিত হামলা চালায়। আইএসএফের অভিযোগ, তৃণমূল কর্মীরা একজোট হয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। পুরো ঘটনায় ব্যাপক উত্তেজনা বিরাজ করছে। রাজ্যপাল পঞ্চায়েত নির্বাচন নিরাপদে সম্পন্ন করতে সক্রিয়। কখনও রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে সতর্ক করেছেন আবার কখনও পুলিশ-প্রশাসনকে সঠিক ভূমিকা পালনের বার্তা দিয়েছেন।
রাজভবনে খোলা হয়েছে শান্তির ঘর। সেখানে ফোন করে অভিযোগ জানানো হচ্ছে। শুধু তাই নয়, রাজ্যপাল হিসেবে তিনি সহিংসতা-বিধ্বস্ত ভানগড়, ক্যানিং ও কোচবিহার সফর করছেন। তিনি নিহত ও আহত রাজনৈতিক কর্মীদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলছেন। বিরোধীদের অভিযোগ শুনছেন।
যদিও রাজ্যপালের এই ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে রাজ্যের ক্ষমতাসীন তৃণমূল। তাঁদের অভিযোগ ছিল বিজেপি নেতা-কর্মীদের বেছে বেছে খুন করা হলেও এবার পঞ্চায়েতে সবচেয়ে বেশি হিংসার শিকার হয়েছেন টিএমসি কর্মীরা।
কয়েকদিন আগে গীতালদহে খুন হন বাবু হক নামে এক তৃণমূল কর্মী। গভর্নর রাতে তার পরিবারকে ডেকেছিলেন। পরিবারের খোঁজ খবর নেওয়ার পর রাজ্যপাল তাদের যথাযথ সাহায্যের আশ্বাস দেন।
এদিকে আবার গরম হয়ে গেল গীতালদহ। ওই এলাকার ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের আঞ্চলিক সভাপতি মাহফুজার রহমানকে বেঁধে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিজেপি-সমর্থিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে রাতেই কোচবিহার শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে রাজ্যপাল রাজ্য নির্বাচন কমিশনার ও জেলা পুলিশ সুপারকে ডেকে পাঠান। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ ও শান্তিপূর্ণ ভোটের বার্তা দেন তিনি। এরপর রবিবার সকালে রাজ্যপাল ব্যক্তিগতভাবে হাসপাতালে যান।
আহত তৃণমূল নেতার সঙ্গে দেখা করে একসঙ্গে থাকার বার্তা দেন তিনি। যদিও তৃণমূল অভিযোগ করেছে, রাজ্যপাল ক্ষতিগ্রস্ত টিএমসি শিবিরের কর্মীদের সঙ্গে দেখা করার পর অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি করেননি। হামলার ঘটনায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলছে বিজেপি বা অন্য বিরোধীরা। বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ বলেছেন যে রাজ্যপাল তার সাংবিধানিক দায়িত্ব জানেন। সেজন্য তৃণমূলকে শেখা উচিৎ তাদের কী করা উচিৎ নয়।
No comments:
Post a Comment