খুন নাকি আত্মহত্যা! গায়ে আগুন, নিহত ১ গৃহবধূ
নিজস্ব সংবাদদাতা, বীরভূম, ২১ জুলাই : বীরভূমের বোলপুর পৌরসভার কাছারিপট্টি এলাকায় বৃহস্পতিবার সকালে তনুশ্রী ঘোষ নামে এক তরুণীকে নৃশংসভাবে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠেছে। বিয়ের সময় নগদ টাকা ছাড়াও মেয়েকে ৬ ভরি স্বর্ণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও নগদ টাকা ও তিন গ্রাম স্বর্ণ দিলেও আর্থিক অনটনের কারণে বাবা বাকি সোনা দিতে পারেননি। বাবার অভিযোগ, মেয়েকে পুড়িয়ে মেরেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
মেয়েটির পরিবারের লোকজন তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। বোলপুর থানার পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা শুরু করেছে। এই ঘটনায় মৃতার স্বামী বাপন ঘোষকে গ্রেফতার করেছে বোলপুর থানার পুলিশ।
সূত্রের খবর, তনুশ্রী দেবীর বাবার বাড়ি বীরভূমের সাঁইথিয়া থানার রুদ্রনগরে। সাত বছর আগে বোলপুরের কাছারিপট্টির বাসিন্দা অজিত ঘোষের ছেলে বাপন ঘোষের সঙ্গে তার বিয়ে হয়।
তনুশ্রীর বাবার পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ, বিয়ের পর মেয়ের কাছে টাকা দাবি করা হয়। প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। তাকে মারধরও করা হয়। তিনি বলেন, প্রায়ই তারা মেয়েটিকে হুমকি দিত। মেয়েকে হত্যা করে রেললাইনে ফেলে দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হত।
মেয়েটির বাবার অভিযোগ, বিয়ের সময় অনেক যৌতুক নেওয়া হয়েছে। এখন তাদের দুটি সন্তানও রয়েছে। একজনের বয়স সাত বছর আর অন্যজনের তিন বছর। বুধবার মেয়েটি তার বাপের বাড়ি থেকে শ্বশুর বাড়িতে ফিরে আসে।এরপর বৃহস্পতিবার আনুমানিক দোতলা বাড়ি থেকে কালো ধোঁয়া নিয়ে পুত্রবধূর চিৎকার শুনতে পায় প্রতিবেশীরা। তিনি দৌড়ে গিয়ে মেয়েটিকে দগ্ধ অবস্থায় বাঁচান।
মেয়েটির বাবা রাজকুমার ঘোষের অভিযোগ, “বিয়ের পর থেকেই স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন মেয়েটিকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে। বিয়ের সময় গয়না, টাকা ও আসবাবপত্র দেওয়া হয়েছিল। শ্বশুরবাড়ির লোকেরা মেয়েটিকে বেধড়ক মারধর করে এবং এরপর গায়ে কেরোসিন ঢেলে দেয় এবং বলে যে তাদের মেয়েটি বাড়িতে কেউ না থাকায় আত্মহত্যা করেছে।
তিনি বলেন, “বিয়ের পর ওরা আমাকে টাকার জন্য চাপ দিত। সাত বছর আগে সিদ্ধান্ত হয়েছিল নগদ ২ লাখ টাকা ও ৬ গ্রাম সোনা দিতে হবে, কিন্তু আমরা দিয়েছি মাত্র তিন গ্রাম।"
No comments:
Post a Comment