ভগবান শিবের তৃতীয় জ্যোতির্লিঙ্গের অলোকিক মহিমা
মৃদুলা রায় চৌধুরী, ২৯ জুলাই : শ্রাবন মাসে ভগবান শিবের আরাধনা করলে সমস্ত দুঃখ দূর হয়। সনাতন ধর্মে শিবকে মোক্ষের দেবতা বলা হয়। শ্রাবন মাসে ভগবান শিবের উপাসনা করার জন্য প্রচুর সংখ্যক ভক্ত মন্দিরে যান। তবে শিবের ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গের দর্শনের আলাদা তাৎপর্য রয়েছে। মধ্যপ্রদেশের উজ্জয়নীর মহাকালেশ্বর জ্যোতির্লিঙ্গও এই ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গের অন্তর্ভুক্ত। বাবা মহাকাল শিবের তৃতীয় জ্যোতির্লিঙ্গ। প্রতিটি জ্যোতির্লিঙ্গের নিজস্ব গুরুত্ব ও বিশেষত্ব থাকলেও বাবা মহাকালের মহিমা আলাদা। শিবের তৃতীয় জ্যোতির্লিঙ্গ বাবা মহাকালের বিশেষত্ব কী, জেনে নেওয়া যাক-
কেন বাবা মহাকাল বিশেষ:
উজ্জয়নীতে অবস্থিত মহাকালেশ্বরই একমাত্র দক্ষিণমুখী জ্যোতির্লিঙ্গ।বাবা মহাকালের শিবলিঙ্গের বিশেষত্ব হল এটি তিনটি ভাগে বিভক্ত।মহাকালেশ্বর শিবলিঙ্গের নিচের অংশে, দ্বিতীয় ভাগে ওমকারেশ্বর শিবলিঙ্গ এবং তৃতীয় ভাগে নাগচন্দ্রেশ্বর শিবলিঙ্গ অবস্থিত। বিশেষ বিষয় হল নাগচন্দ্রেশ্বর শিবলিঙ্গ বছরে একবার নাগপঞ্চমীর দিনেই দেখা যায়।
বাবা মহাকালের শহর উজ্জয়িনী। উজ্জয়িনী নগরীতে বর্তমানে তিনটি মহাকাল রয়েছে। প্রথম কাল ভৈরব, দ্বিতীয় অর্ধ কাল ভৈরব এবং তৃতীয় গদকালিকা মহাকাল। এভাবেই উজ্জয়িনীতে শিবের মহিমা অনুরণিত হয়।
ভস্ম আরতির গুরুত্ব:
বাবা মহাকালের মন্দিরে ভস্ম আরতির বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। বাবার ভস্ম আরতিতে যোগ দিতে দেশ-বিদেশের মানুষ উজ্জয়িনী যায়। প্রতিদিন বাবার সাজ শুধুমাত্র তাজা ছাই দিয়ে করা হয়। এই ভস্ম আরতিতে অংশগ্রহণ করা সহজ নয়। এজন্য আগে থেকেই অনলাইন বুকিং করতে হয়।
প্রতি বছর উজ্জয়নী বাবা মহাকালের একটি বিশাল যাত্রা বের করা হয়। এই রাইডের বিশেষ বিষয় হল কোনও মাতাল ব্যক্তি বাবার যাত্রায় যোগ দিতে পারবেন না। প্রতিটি উজ্জয়িনীবাসীকে ভগবান ভোলেনাথের শোভাযাত্রায় নাচতে দেখা যায়। এই দিনে শিবের মহিমা সর্বত্র দৃশ্যমান ও শোনা যায়।
উজ্জয়িনীতে তিনজন মহাকাল থাকতে পারে, কিন্তু উজ্জয়নীর রাজাকে বলা হয় শুধু একজন অর্থাৎ বাবা মহাকাল। এটাও বিশ্বাস করা হয় যে রাজা বিক্রমাদিত্যই ছিলেন শেষ রাজা যিনি উজ্জয়নীতে রাত্রি যাপন করেছিলেন। এখানে কোনো রাজা মহাকালের দরজায় মাথা নত না করে রাত কাটাতে পারেন না। যদি কেউ এটা করে তবে এটাই তার শেষ রাত।
No comments:
Post a Comment