বাবার কুকীর্তি! স্ত্রী ও ৪ বছরের সন্তানকে বিক্রি
নিজস্ব সংবাদদাতা, আলিপুরদুয়ার, ০৫ জুলাই : টাকার জন্য স্ত্রী ও চার বছরের শিশুকে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। এই অভিযোগে ফালাকাটা পুলিশ আলিপুরদুয়ার জেলার ফালাকাটা থানার অন্তর্গত উমাচরণপুর এলাকার বাসিন্দা নূর হুসেন নামে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর স্ত্রী ও ছেলেকে বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে। জানা যায়, ১১ বছর আগে ফালাকাটার উমাচরণপুর এলাকার বাসিন্দা নূর হোসেনের সঙ্গে থানা এলাকার বাসিন্দা লাভলী খাতুনের বিয়ে হয়।বিয়ের পর ১১ বছর কেটে গেছে। এখন তার সংসারে এক মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে। ২৫শে জুন, নূর হোসেন তার স্ত্রী লাভলী এবং ৪ বছরের ছেলেকে নিয়ে দিল্লির উদ্দেশ্যে রওনা হন, বাড়িতে এক মেয়ে ও এক ছেলেকে রেখে।
৫ দিন পর নূর হোসেন বাড়িতে ফিরে গেলেও লাভলী ও তার ৪ বছরের ছেলে তার সঙ্গে ছিলেন না। স্ত্রী ও ছেলের বিষয়ে জানতে চাইলে নূর তার স্ত্রী ও ছেলে কোথায় আছে তা স্পষ্ট করে জানাননি। স্ত্রী-পুত্র নিখোঁজের খবর আগুনের মতো ছড়িয়ে পড়ে গোটা গ্রামে। এরপর ঘটনার খবর যায় লাভলীর বাবার বাড়িতে। গত তিন দিন ধরে নূর হোসেনের পরিবারের সদস্যরা তাকে লাভলী ও তার ছেলের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন।
একাধিকবার জিজ্ঞাসাবাদের পরও নুর তার স্ত্রী ও সন্তানের হদিস জানাননি। এরপর নূরের প্রতি সন্দেহ হয় তার। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক বছর ধরে আর্থিক সমস্যা নিয়ে দু’জনের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে তাদের মধ্যে বেশ কয়েকবার মারামারি হয় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় লাভলীর পরিবারের সন্দেহ, নূর তার স্বার্থ চরিতার্থ করতে স্ত্রী ও ছেলেকে বিক্রি করে দিতে পারে।
লাভলীর বাবা আকবর আলী গতকাল ফালাকাটা থানায় নৃশংসতা ও গৃহবধূকে অপহরণের অভিযোগে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ওই অভিযোগ পেয়ে ফালাকাটা থানার পুলিশ কনে হয়রানি ও মানব পাচারের মামলা রুজু করে। এদিন ফালাকাটা থানার পুলিশ অভিযুক্ত নূর হোসেনকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে।
পুলিশ আসামি নূরকে আদালতে হাজির করে। আলিপুরদুয়ার জেলার অতিরিক্ত জেলা ডেরা আদালতের বিচারক অভিযুক্ত নুর হুসেনকে ১৪ দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মা ও শিশুর সুরক্ষার জন্য এবং আদালতে হাজির করা হলে ঘটনার তদন্ত করতে।
নূর নিজেই তার স্ত্রী লাভলী ও চার বছরের ছেলেকে হত্যা করেছে নাকি কোথাও বিক্রি করেছে তা খতিয়ে দেখা শুরু করেছে পুলিশ। তবে জিজ্ঞাসাবাদে সে স্বীকার করেছে যে সে তার স্ত্রী ও সন্তানকে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করেছে।
এ ব্যাপারে ফালাকাটা থানার আইসি সমিত চক্রবর্তী বলেন, আমরা মহিলার পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি এবং একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। নারী হয়রানি ও মানব পাচারের অভিযোগে মঙ্গলবার সকালে তাঁকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করা হয়। নিখোঁজ নারী ও তার শিশুকে উদ্ধারে আমরা সব প্রক্রিয়া শুরু করেছি।
No comments:
Post a Comment