মহাবীরের বানী
মৃদুলা রায় চৌধুরী, ১৯ এপ্রিল : ভগবান মহাবীর, যাকে জৈনধর্মের ২৪ তম তীর্থঙ্কর বলা হয়, তিনি ঋষিদের জন্য পাঁচটি মহাব্রত চেয়েছিলেন যারা মায়া ও সন্ন্যাস ত্যাগ করেছিলেন এবং যারা পার্থিব জীবনযাপন করেছিলেন তাদের জন্য ১২টি অনুব্রত চেয়েছিলেন। জৈন ধর্মাচার্য আচার্য লোকেশ মুনির মতে, যে ব্যক্তি মহাবীর ভগবানের বলা পাঁচটি নীতির প্রকৃত অর্থ বুঝতে পেরেছে, তার জীবন সফল।
সাধক ও মহাপুরুষদের বলা অমূল্য কথা জীবনে সঠিক পথ দেখাতে কাজ করে, কিন্তু প্রশ্ন জাগে যে, বহু বছর আগে বলা সত্য, অহিংসা, ব্রহ্মচর্য ইত্যাদি সম্পর্কে মহাবীরের এই বাণীগুলো আজকের যুগে মানানসই কিনা? চলুন জেনে নেই-
অহিংসা:
মহাবীরের অহিংসার নীতি কাউকে কাপুরুষ করে না। তাঁর স্পষ্ট বার্তা ছিল যে নির্ভীকতা ছাড়া কেউ অহিংস হতে পারে না। একে তিনি দুই ভাগে ভাগ করেছেন। প্রয়োজনীয় সহিংসতা এবং অপ্রয়োজনীয় সহিংসতা। অহিংস হওয়ার মানে এই নয় যে কেউ আপনার পরিচয়কে আক্রমণ করলে হাত গুটিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা উচিৎ? জৈন ধর্মের ইতিহাসে, জৈন শ্রাবক সেনাপতিরাও রয়েছেন, যারা তাদের রাজ্য রক্ষার জন্য লড়াই করেছিলেন।
সত্য:
মহাবীর বলেছেন, একজন ঋষি সত্য কথা বলবেন , অসত্যকে সমর্থনও করবে না। তবে এটাও বলা হয়েছে যে কেউ এমন সত্য কথা বলবে না যা কাউকে আঘাত করবে।
চুরি না করা:
ভগবান মহাবীর তৃতীয় নিয়ম একজন সন্ন্যাসীর জন্য কোনও প্রকার চুরি না করা বা কারো চুরি করা কিছু গ্রহণ না করা। সুস্থ সমাজের জন্য এই নিয়ম শুধু ঋষিদের জন্য নয়, একজন সাধারণ মানুষের জন্যও ছিল তখন এবং আজও আছে।
ব্রহ্মচর্য:
ভগবান মহাবীর ব্রহ্মচর্য, অর্থাৎ ব্রহ্মার চর্যায় নিমগ্ন হওয়াকেই শ্রেষ্ঠ তপস্যা বলে মনে করতেন। মানে কোন কিছুর প্রতি আসক্তি না থাকা বা অনাসক্ত বলা। জৈন ধর্মের মতে, সমাজে বসবাসকারী একজন ব্যক্তির উচিৎ তার স্ত্রী ছাড়া অন্য সব নারীকে তার মা ও বোন হিসেবে বিবেচনা করা।
অপরিগ্রহ :
মহাবীর এক বিরাট সামাজিক বিপ্লবের সূচনা করেছিলেন। বর্তমানে দুই ধরনের পৃথিবী দেখা যায়। যার মধ্যে একটি শ্রেণী অত্যন্ত ধনী এবং অন্য শ্রেণী অত্যন্ত দরিদ্র। এই অবস্থা এড়াতে ভগবান মহাবীর অপরিগ্রহের নীতি বলেছিলেন, অর্থাৎ তোমার ভাই যদি ক্ষুধার্ত ঘুমায় এবং পেট ভরে না খায়, তবে তুমি মোক্ষের অধিকারী নও।
No comments:
Post a Comment