আর কিছু দিন পর ১৮ই আগস্ট আসতে চলেছে কৃষ্ণ জন্মাষ্টমী। বৃন্দাবন মথুরাতে ধুমধাম করে পালিত হয় এই জন্মাষ্টমী। কৃষ্ণ জন্মাষ্টমীতে কৃষ্ণকে ৫৬ ভোগ দেওয়া হয়ে থাকে। কেন ভগবান শ্রী কৃষ্ণকে ৫৬ প্রকার ভোগ নিবেদন করা হয়? জানেন। পেছনের পৌরাণিক কাহিনী কি বলছে চলুন জেনে নেওয়া যাক
কিংবদন্তী অনুসারে, ভগবান কৃষ্ণকে শৈশবে মা যশোদার ৮ বার খাওয়াতেন। ব্রজবাসীরা তখন ইন্দ্রদেবকে খুশি করার জন্য একটি বড় অনুষ্ঠানের আয়োজন করত। কৃষ্ণ নন্দ বাবাকে জিজ্ঞাসা করলেন কেন এই অনুষ্ঠান হয়, তখন তিনি বললেন যে স্বর্গের ভগবান ইন্দ্রদেবকে খুশি করার জন্য এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যাতে সারা বছর ভাল বৃষ্টি হয় আর ভাল ফসল হবে।
তখন শ্রীকৃষ্ণ বললেন বৃষ্টি করাই যখন নিয়ম ইন্দ্রদেবের পূজো কেন? গোবর্ধন পর্বতের পূজো করা উচিৎ। কারণ তার থেকেই ফল এবং শাকসবজি এবং পশুদের খাদ্য পাওয়া যায়।
তখন সবাই কৃষ্ণের কথাকে যথাযথ ও যৌক্তিক মনে করে ইন্দ্রের পূজো না করে গোবর্ধনের পূজো করে। ইন্দ্রদেব তখন অহংকারে রাগে প্রবল বর্ষণ করলেন, সর্বত্র বন্যায় ভেসে যায়।
জল বাড়তে থাকায় কৃষ্ণ বললেন গোবর্ধন আমাদের আশ্রয় দিতে পারে। আর তখন ইন্দ্রের ক্রোধ থেকে রক্ষা করবতে কৃষ্ণ গোবর্ধন পর্বতকে কনিষ্ঠা আঙুল তুলে সমগ্র ব্রজকে রক্ষা করেন।
পরের সাত দিন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কিছু না খেয়ে গোবর্ধন পর্বতকে ধরে থাকেন। অষ্টম দিনে বৃষ্টি থামলে সবাই গোবর্ধনের আশ্রয় থেকে বেরিয়ে আসে। ইন্দ্র দেব ও নিজে ভুল বুঝতে পেরে শ্রী কৃষ্ণের কাছে ক্ষমা চান।
এর পর সবাই মনে করে যে কৃষ্ণ তাদের রক্ষা করেছেন টানা ৭ দিন কিছু খাননি বা পানও করেননি। তারপর মাতা যশোদা সহ ব্রজবাসীরা প্রতিদিন আট প্রহর অনুসারে সাত দিনসহ কানহার জন্য ৫৬ ধরনের সুস্বাদু খাবার তৈরি করেছিলেন। এভাবে ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে ছাপ্পান্ন ভোগ নিবেদন করা হয়।
কী কী থাকে :
ভগবান শ্রীকৃষ্ণকে নিবেদন করা ছাপ্পান্নটি ভোগে ভাত, স্যুপ, চাটনি, তরকারি, দই, শিখরান, শরবত, বলাকা, আখ , বাটক, মাটি, ফেনী, লুচি, খাজলা, ঘেভার, মালপোয়া, ছোলা, জিলিপি মেসু, রসগোল্লা , পুডিং, মহারায়তা, থুলি, লবঙ্গ, খুরমা, ডালিয়া, পরীখা, মৌরি সহ বিলসরু, লাড্ডু, শাক, আধোনার আচার, মথ, ক্ষীর, মাখন, ক্রিম, রাবড়ি, পাপড়, গরুর ঘি, সেরা, লস্যি, সুভাত, মোহন , সুপারি, এলাচ, ফল, পান, মোহনভোগ, লবণ, কষাকষি, মিষ্টি, তিক্ত ও অম্ল দেওয়া হয়।
No comments:
Post a Comment