কলকাতায় গঙ্গা নদীর মাটি ও বালি নিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কলকাতা নদী ট্রাফিক পুলিশ। দুর্গাপূজার আগে গঙ্গার মাটি আনতে নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় মাথায় আঘাত পেয়েছেন ভাস্করদের।
সম্প্রতি গঙ্গা দিয়ে নৌকায় ত্রিশ টন মাটি নিয়ে কলকাতার কুমারতলী যাচ্ছিলেন ভাস্কর। উলুবেড়িয়া থেকে মাটি বোঝাই একটি নৌকা সম্প্রতি বাবুঘাটে কলকাতা নদী ট্রাফিক পুলিশ তাঁকে আটকায়।
কারণ জানতে চাইলে বলা হয়, এখন কলকাতা সংলগ্ন গঙ্গা দিয়ে মাটি বা বালি বহনে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পুলিশের নির্দেশ শুনে কুমারতলী মৃৎশিল্পী ও ভাস্করদের মাথায় বজ্রপাতে পড়ে।
কারণ শিল্পীদের মতে, উলুবেড়িয়া থেকে গঙ্গার পথ ধরে কুমহারতলি ঘাটে মাটি আসে, যা ভাস্কর্য তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। মাটি না এলে প্রতিমা হবে কী করে?
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে, তিন মাস আগে। কাশীপুরের কাছে গঙ্গা থেকে বালি তোলার বিষয়টি উত্তর পোর্ট থানার নজরে আসে।
পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতায় প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই গঙ্গা থেকে বালি তোলা হচ্ছিল। এটি বন্ধ করতে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন।
এই প্রেক্ষাপটে নির্দেশিকা জারি করা হয় যে কলকাতা সংলগ্ন গঙ্গার ওপারে নৌকায় মাটি ও বালি পরিবহন করা যাবে না।
ডিজেল বোটে মাটি দিয়ে উলুবেড়িয়া থেকে কুমারতলি ঘাটে পৌঁছতে পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগে। তেলের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এর ব্যয়ও বেড়েছে। সামনে মা অন্নপূর্ণার আরাধনা। কুমহারতলীর শিল্পীরা ভাবতেও পারছেন না কীভাবে প্রতিমা তৈরির কাজ হবে?
কুমারতলী মৃৎশিল্প সংস্কৃতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাবু পলের কথায়ও নিশ্চয়তা ফুটে উঠেছে। তিনি বলেন, “উলুবেড়িয়া থেকে মাটি এনে প্রতিমা তৈরি করা হয়। সেই মাটি না থাকলে প্রতিমা তৈরি হবে না। উলুবেড়িয়ার কাদামাটি প্রতিমার নাক ও আঙুল তৈরির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
কুমারতলীর কারিগররা প্রশ্ন করেন, “কাশীপুরে গঙ্গা থেকে অবৈধভাবে বালি তোলার বোঝা তাদের ঘাড়ে চাপানো হচ্ছে কেন?”
ভাস্কর মিন্টু পাল বলেন, পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে বিনীত অনুরোধ যেন কুমোরদের গঙ্গার পথ দিয়ে মাটি আনার অনুমতি দেওয়া হয়।" সমস্যা মেটাতে সম্প্রতি কলকাতা রিভার ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করেছেন কুমারতলীর মৃৎশিল্পীরা।
কলকাতা পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, নবনের নির্দেশে নৌকায় বালি ও মাটি পরিবহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মৃৎশিল্পীদের সমস্যার কথা নবান্নের শীর্ষ কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। আশা করা হচ্ছে এই সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে।
No comments:
Post a Comment