বাদামের পুষ্টি:
বাদাম প্রোটিন, ভিটামিন ই, ফাইবার এবং ওমেগা ৩ ভাল পরিমাণে সমৃদ্ধ। এছাড়া বাদামে মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট, ম্যাগনেসিয়াম, নিয়াসিন, রিবোফ্লাভিন উপাদান পাওয়া যায়। তাই বাদাম স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী বলে মনে করা হয়।
পোস্ত বীজের পুষ্টিগুণ:
পোস্ত বীজ প্রোটিন, ফাইবার, ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস সমৃদ্ধ। এছাড়া পোস্ত বীজে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে। পোস্তের বীজে ক্যালোরি এবং চর্বিও থাকে তবে ওজন কমানোর সময় এটি শুধুমাত্র একজন ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শে খাওয়া উচিৎ।
পোস্ত বীজ এবং বাদামের দুধের উপকারিতা:
বাদাম এবং পোস্ত বীজ উভয়ই স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এ দুটিই প্রোটিন, ক্যালসিয়াম এবং আয়রনের ভালো উৎস। যদি দুধের সাথে বাদাম এবং পোস্তের বীজ মেশানো হয় তবে এর অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায়। বদমাশ এবং খাসখাসের মিথস্ক্রিয়া
১. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখুন:
বাদাম দুধ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে। এতে রয়েছে পটাশিয়াম, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু যদি আপনার রক্তচাপ ইতিমধ্যেই বেশি থাকে, তবে আপনার এটি শুধুমাত্র একজন ডাক্তারের পরামর্শে সেবন করা উচিৎ।
২. কিভাবে পেশী শক্তিশালী করা যায়:
বাদাম এবং পোস্ত বীজের সাথে দুধে প্রচুর পুষ্টি থাকে। এমন অবস্থায় প্রতিদিন এই দুধ পান করলে মাংসপেশি মজবুত হয়। পেশী বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়। আসলে, পেশীর বিকাশের জন্য প্রোটিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই দুধে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন রয়েছে, যার কারণে মাংসপেশি শক্তিশালী হয়।
৩. কিভাবে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে পরিত্রাণ পেতে:
পেট সংক্রান্ত সমস্যার মধ্যে কোষ্ঠকাঠিন্য একটি সাধারণ সমস্যা। আজকাল বেশিরভাগ মানুষই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগছেন। বাদাম এবং পোস্ত দুধে ফাইবার পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে বাদাম ও পোস্ত দুধ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।
৪. কিভাবে অনিদ্রা পরিত্রাণ পেতে:
অনিদ্রা মানে সারারাত ঘুম না হওয়া। বাদামের দুধ এবং পোস্ত দানা অনিদ্রার সমস্যাও দূর করে। এই দুধ টানা কয়েকদিন খেলে অনিদ্রার সমস্যা দূর হয় এবং ঘুম খুব ভালো হয়। ঘুম না হলে রাতে এই দুধ খেতে পারেন।
৫. রক্তশূন্যতার সমস্যা থেকে মুক্তি পান:
আজকাল মহিলাদের রক্তশূন্যতার সমস্যা বেশ সাধারণ হয়ে উঠেছে। অ্যানিমিয়া মানে শরীরে রক্তের অভাব। বেশিরভাগ নারীকেই এই সমস্যায় পড়তে হয়। এমন অবস্থায় বাদাম ও পোস্ত দুধ পান করা উপকারী। এতে রয়েছে আয়রন, যা রক্তস্বল্পতার সমস্যা দূর করে।
৬. শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করুন:
শীতকালে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায়, এমন পরিস্থিতিতে দুধের সঙ্গে বাদাম ও পোস্ত খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উন্নতি ঘটে।প্রতিদিন এই দুধ পান করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। আপনি শীঘ্রই অসুস্থ হবেন না।
৭. ওজন কমানোর খাবার:
বাদাম এবং পোস্ত বীজের সাথে দুধ খুব স্বাস্থ্যকর। আপনি যদি ওজন কমাতে চান তবে আপনি এটি আপনার ডায়েটে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।এই দুধে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা ক্ষুধা কমায় এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।
৮. হাড় শক্ত করুন:
দুধ ও পোস্তের বীজে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম থাকে। হাড়, জয়েন্টে ব্যথা হলে বা হাড় দুর্বল হলে বাদাম ও পোস্ত দানা দিয়ে দুধ পান করতে পারেন। এর ফলে হাড় মজবুত হয় এবং হাড় সংক্রান্ত রোগও দূর হয়।
৯. কিভাবে মানসিক চাপ এবং বিষণ্নতা থেকে পরিত্রাণ পেতে:
বাদাম, পোস্ত দুধ পান করা হতাশা এবং মানসিক চাপেও উপশম দেয়। আজকাল বেশিরভাগ মানুষই মানসিক চাপের সম্মুখীন হন, এমন পরিস্থিতিতে তারা বিষণ্ণ থাকেন। আপনিও যদি মানসিক চাপে থাকেন, দুশ্চিন্তায় থাকেন তাহলে বাদাম ও পোস্ত দানা দিয়ে দুধ পান করতে পারেন।
আয়ুর্বেদ অনুসারে, পিত্ত প্রকৃতির লোকদের সবসময় ভিজিয়ে রাখা বাদাম খাওয়া উচিত। বাদামের খুব গরম স্বাদ রয়েছে, এটি ত্বকে ফুসকুড়ি, জ্বালা বা অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। যেখানে বাদাম ভিজিয়ে খেলে তাদের প্রভাব স্বাভাবিক হয়ে যায়। এমতাবস্থায় পিত্ত প্রকৃতির লোকেরাও সহজে বাদাম, পোস্তযুক্ত দুধ খেতে পারেন।
কিভাবে বাদাম এবং পোস্ত দুধ তৈরি করবেন
বাদাম এবং পোস্ত বীজের দুধ তৈরি করা বেশ সহজ। এজন্য প্রথমে বাদামগুলো ২-৪ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন।
এরপর এক গ্লাস দুধে খোসা ছাড়ানো পোস্ত দানা ও বাদাম দিন।
চাইলে মিক্সারে দিয়েও পিষে নিতে পারেন।
এছাড়া আপনি চাইলে এতে পেস্তাও যোগ করতে পারেন।
আপনি যদি এটি একটু মিষ্টি করতে চান, আপনি মধু যোগ করতে পারেন।
এতে দুধের স্বাদ বাড়বে এবং পুষ্টিকরও হবে।
এছাড়াও আপনি আপনার খাদ্য তালিকায় বাদাম এবং পোস্ত দুধ অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। এটি পান করলে হাড় মজবুত হয় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি পায়। তবে এটি পান করার আগে আপনাকে অবশ্যই একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করতে হবে।
No comments:
Post a Comment