ফোন আর কম্পিউটার, এই দুটি ডিভাইস ছাড়া আজকাল আমাদের কারওই মোটের উপর চলে না। সেই সঙ্গে আছে ট্যাব, ভিডিয়ো গেম, টেলিভিশন ইত্যাদি। বই পড়ার জন্যও আছে ইলেকট্রনিক ডিভাইস। কিন্তু মনে রাখবেন যে এর প্রতিটি থেকেই যে আলো বিচ্ছুরিত হয়, তা চোখের উপর বাড়তি স্ট্রেন ফেলতে পারে। তাই প্রথমেই আপনাকে বুঝতে হবে যে চোখের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে গেলে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারের উপর কিছু নিয়ন্ত্রণ থাকা উচিত। কম আলোয় লেখাপড়া করা যেমন অনুচিত, তেমন খুব তীব্র আলোতেও দীর্ঘক্ষণ থাকলে চোখের সমস্যা হতে পারে। যাঁদের পরিবারে ক্ষীণদৃষ্টিশক্তি, গ্লুকোমা বা ডায়েবেটিসের ইতিহাস আছে, তাঁদের আগে থেকেই সাবধান হওয়া উচিত। থাইরয়েডের সমস্যা, মাইগ্রেন, হাইপারটেনশন থাকলেও নিয়মিত চোখের চেকআপ করানো ও মূল সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করতে হবে।
গ্লুকোমা কাকে বলে জানেন তো? আমাদের চোখের ভিতরের প্রেশার, যার পোশাকি নাম ইন্ট্রা অকিউলার প্রেশার যদি বেড়ে থাকে, তা হলে দেখার জন্য যে অপটিক নার্ভগুলি থাকে, সেগুলি ক্রমশ দুর্বল হয়ে পড়তে আরম্ভ করে। একটা সময় দৃষ্টিশক্তিই ক্ষীণ হয়ে যায়। সমস্যা হচ্ছে, কারও যদি গ্লুকোমা থাকে, তা হলে প্রাথমিকভাবে তেমন কোনও অসুবিধে হয় না। ফলে যখন রোগী ডাক্তারের সাহায্য নেওয়ার কথা ভাবেন, তখন মোটের উপর অনেকটাই দেরি হয়ে যায়। আর এটা একেবারে ভুল ধারণা যে কেবল বয়স হলেই গ্লুকোমা হয় – তা কিন্তু অনেক কম বয়সেও আপনার দৃষ্টিশক্তি কেড়ে নিতে পারে। একবার গ্লুকোমা হয়ে গেলে কিন্তু পুরোপুরি সারানো যায় না। তাই ঘন ঘন মাথাব্যথা, চোখে ব্যথা বা চোখে ভারীভাব টের পেলেই ডাক্তারের কাছে চেক আপের জন্য যাওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন দিশা আই হসপিটালের সঙ্গে যুক্ত সিনিয়ার কনসালট্যান্ট, গ্লুকোমা সার্ভিসেস, ডা. সুচন্দা সর। তিনি বলছেন, ‘‘গ্লুকোমা রোগীদের কিন্তু সারা জীবন ডাক্তার দেখিয়ে যেতে হবে। সমস্যাটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। তার জন্য যত তাড়াতাড়ি রোগটা ধরা পড়বে, তত ভালো।’’
No comments:
Post a Comment