এক দিকে ক্রমশ উপকূলের দিকে এগিয়ে আসা অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ইয়শ আর অন্যদিকে ভরা কোটাল- দুইয়ের জেরে মঙ্গলবার দিনভর তোলপাড় করল দিঘার সমুদ্র। মঙ্গলবার সকাল থেকে দিঘা সমুদ্র সৈকত কার্যত উত্তাল। গার্ডওয়াল টপকে সমুদ্রের জলরাশি একেবারে স্থলভাগে প্রবেশ করতে শুরু করে। পাশাপাশি শংকরপুর ও তাজপুর এলাকায় নদী বাঁধ টপকে সমুদ্রের নোনা জল আশেপাশের গ্রামের মধ্যে প্রবেশ করতে শুরু করে।
ইতিমধ্যে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে জেলার উপকূলবর্তী অঞ্চলে থেকে মোট এক লক্ষ দশ হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এই ঘূর্ণিঝড়ের জন্য। পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় ইয়াস মোকাবিলায় মঙ্গলবার দুপুরে তড়িঘড়ি দিঘা- শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের ভবনে বৈঠকে বসেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী সৌমেন কুমার মহাপাত্র ও অখিল গিরি। ইয়াসের সতর্কতায় দিঘায় আগে থেকেই লাল সর্তকতা জারি করা হয়েছে।
মঙ্গলবারের মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস অতি শক্তিশালী রূপ ধারণ করে। তার এক প্রকার ব্যাপক আকারে প্রভাব পড়তে শুরু করে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার উপকূলবর্তী দিঘা, শঙ্করপুর, তাজপুরের মতো সৈকত এলাকাগুলিতে। মঙ্গলবার সকাল থেকে একেবারে গার্ডওয়াল টপকে ১৫ফুট উচ্চতা পর্যন্ত সমুদ্রের নোনা জল উঠতে শুরু করে। গত আম্ফান ঝড়েই শংকরপুর ও তাজপুর এলাকার একাধিক সমুদ্র বাঁধ ব্যাপক আকারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যা এখনো পর্যন্ত মেরামত সম্পন্ন হয়নি।
আর তারই মাঝে ইয়াসের চোখ-রাঙানিতে মঙ্গলবার দুপুর থেকে একেবারে গ্রামের ভেতরে নোনাজল প্রবেশ করতে শুরু করলো। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একাধিক কাঁচা বাড়ি। জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে শংকরপুর এলাকা থেকে ১১০টি পরিবারকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। নিজেদের বাড়ি ঘর দুয়ারের হতাশায় ভুগছেন তারা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার জেলাশাসক পূর্ণেন্দু কুমার মাঝি জানিয়েছেন, "আমরা প্রায় ১লক্ষ ১০হাজার মানুষকে ইতিমধ্যে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছি।
এছাড়াও ঝড় নিয়ে আমরা সম্পূর্ণভাবে সতর্ক রয়েছি। ইতিমধ্যে যথেষ্ট পরিমাণে শুকনো খাবার মজুদ করা হয়েছে। আমি নিজেই কন্ট্রোল রুমে সারাদিন থেকে সমস্ত বিষয় পরিচালনা করব।" দুই মন্ত্রী সৌমেন কুমার মহাপাত্র অখিল গিরি বলেন, "জামড়া, শ্যামপুর, চাঁদপুরের মতো জায়গাগুলিতে বাঁধ টপকে জল ঢুকে গিয়েছে।
এই সমস্ত এলাকাগুলিতে প্রটেকশন রয়েছে। কিন্তু ঢেউ এতটাই উচ্চতায় যে বাঁধ টপকে জল স্থলভাগের প্রবেশ করতে শুরু করে। যদিও সাধারণ মানুষ এখনো সুরক্ষিত রয়েছেন। ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট থেকে শুরু করে সমস্ত দপ্তরকে নিয়ে কোথায় কোন কাজ বাকি আছে তা নিয়ে আমরা জরুরিকালীন আলোচনা করি। সেই সমস্ত কাজগুলো ইতিমধ্যে তৎপরতার সঙ্গে চলছে।"
No comments:
Post a Comment